পাইলস কেন হয় - পাইলস এর প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
ফ্যাটি লিভার কেন হয় - ফ্যাটি লিভার হলে কি খাওয়া উচিতআমাদের মানব দেহের রোগের শেষ নেই কোন না কোন ভাবেই আমরা প্রতিনিয়তই রোগা
আক্রান্ত হয়ে পড়ছি। আজকে আমরা যে রোগটা সম্পর্কে আলোচনা করব সেটা হচ্ছে পাইলস।
আমাদের মাঝে অনেকে আছে তারা জানেন না যে পাইলসের লক্ষণ গুলো কি কি হয়ে কি কারনে
পাইলস হয় থাকে।
পোস্ট সূচীপত্রঃতাই আজকে আমরা আলোচনা করব।এর পাইলস সম্পর্কে পাইলস কি কেন
হয় এর লক্ষণ কোনগুলো পাইলসের চিকিৎসা কি আমাদের এই পোস্টটিতে পাইলস সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে । তাই এ পোস্টটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়বেন তাহলে
পাইলস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন । তাহলে চলুন জেনে নেই এই পাইলস সম্পর্কে।
ভূমিকাঃপাইলস কেন হয়
সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা পাইলস সম্পর্কে এবং এর চিকিৎসা লক্ষণ ও পাইলস হলে আপনি
কি কি খেতে পারবেন না সে সম্পর্কে আলোচনা করা হবে ।কেননা এর পাইলস সম্পর্কে আপনার
যদি ধারণা না থাকে এর লক্ষণ কি কি এর চিকিৎসা আছে কি না পাইলস একবারে ভালো হয়
কিনা পাইলস থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা ।তাই পাইলস সম্পর্কে সার্বিক
দিক থেকে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করব এই পোস্টটিতে যাতে আপনি পোস্টটি পড়ে পাইলস
সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন ।
পাইলস কেন হয়
পাইলস কেন হয় এর অনেকগুলো কারণ থাকে পাইলস হল পায়ুপথেরর একটি রোগ বর্তমানে এ
রোগে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে এ রোগে আক্রান্ত হলে অনেক কষ্ট হয়ে থাকে। যদি এ রোগ
সঠিক চিকিৎসা ও নির্ধারিত সময়ে না করা হয় তাহলে অনেক বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে
হয়। কেননা এর পাইলসের কারণে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা হয়ে থাকে ।পাইলস কেন
হয়? এর কারণগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।
আরো পড়ুনঃ
নিপা ভাইরাস - নিপা ভাইরাস রোগের লক্ষণ
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা
- পুরনো ডায়রিয়া থেকে
- বেশি সময় ধরে টয়লেটে বসে থাকা
- আশযুক্ত খাবার না খাওয়া
- অতিরিক্ত ওজন মালপত্র বহন করা
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিশ্রম না করা
- লিভার সিরোসিস
- অনিয়মিত মলত্যাগ
- মলত্যাগ সময় বেশি চাপ প্রয়োগ করা
এছাড়াও আরো অন্যান্য কারণে পাইলস হয়ে থাকে। যে সমস্ত কারণগুলো উল্লেখ করা হলো
সেগুলো অবশ্যই মনে রাখতে হবে কেননা পাইলস হলে মানুষের ভোগান্তি শেষ থাকে না তাই
অবশ্যই আমাদেরকে সাবধানতার সাথে চলাফেরা করতে হবে ।
পাইলস এর প্রাথমিক লক্ষণ
পাইলসের লক্ষণ অনেকগুলো হতে পারে একজন ব্যক্তির পাইলসের সাথে অন্য আরেকজন
ব্যক্তির পাইলসের লক্ষণগুলো একই নাও হতে পারে ।কেননা লক্ষণগুলো ভিন্ন ভিন্ন ভাবে
প্রকাশ পায় যাদের নতুন পাইলস রোগে আক্রান্ত হয়েছে আর যারা পুরাতন পাইলস রোগে
আক্রান্ত তাদের মধ্যে অনেকখানি পার্থক্য থাকে ।তাহলে চলুন জেনে নেই পাইলস রোগের
লক্ষণ গুলো
- পায়ুপথে চুলকানি ও ব্যথা
- মলত্যাগের সাথে রক্তপাত হওয়া
- মলদ্বারের চারিদিকে গলদা একটি শক্ত অনুভব করা
- মলত্যাগ শেষে জ্বালাপোড়া হতে পারে
- অস্বস্তিকর জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে
এছাড়াও আরো অন্যান্য লক্ষণ দেখা যায় শারীরিক ওজন বৃদ্ধির কারণে পাইলস সমস্যা
দেখা দেয়। তাছাড়া যারা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য ভুগছেন পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা
তাদের অনেক বেশি এবং যারা পায়খানার বেগ ধরে রাখার চেষ্টা করেন তাদেরও এই রোগ
হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
পাইলস এর চিকিৎসা
আমাদের বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনেক রোগেরই আধুনিক চিকিৎসা বের হয়েছে তেমনি
পাইলসের ও অনেক চিকিৎসা করা আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু আমরা সমাজে যারা এই রোগে
আক্রান্ত হয়ে তারা বেশির ভাগই প্রথম অবস্থা দেখে কাউকে বলি না কেননা এই রোগটি
পায়ুপথ হয়ে থাকে সেজন্য লজ্জাবোধ করি ।
কিন্তু আপনি এভাবে রোগের কথা চেপে রাখলে একসময় মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ।
যেকোনো রোগ লজ্জার কিছু নাই কেননা রোগের কথা ডাক্তার কে না বললে আপনি সঠিক
চিকিৎসা পাবেন না।তাই অবশ্যই পাইলস হলে আপনি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবেন
প্রাথমিক অবস্থায় ট্রিটমেন্ট করলে ভালো সম্ভাবনা থাকে।
এছাড়াও এখন বর্তমান সময়ে এন্ডোস কপি পরীক্ষার মাধ্যমে পাইলসের উন্নত চিকিৎসা
করা সম্ভব । আবার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে সে ক্ষেত্রে ডাক্তাররা মলম বা
সাপোটারি এবং অনেক মেডিসিন দিয়ে পাইলস ভালো করার চেষ্টা করে ।তাহলে অবশ্যই
আপনাকে প্রাথমিকভাবে এই রোগে আক্রান্ত হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
অনেক সময় পাইলস পুরাতন হলে ডাক্তাররা অপারেশনের মাধ্যমে ভালো হওয়ার চেষ্টা করে।
এছাড়াও পাইলসের চিকিৎসার বহু ধরনের পদ্ধতি রয়েছে যেমন রিংলাইগেশন ,লেজার থেরাপি
,ইনফ্রারেড ফটোকোয়াগুলেশন ,আল্ট্রয়েড ,ইনজেকশন ,লংগো অপারেশন ।আপনার পাইলস হলে
অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন।
পাইলস থেকে কি ক্যান্সার হয়
যে সকল রোগাক্রান্ত হলে পায়ুপথে মলত্যাগের সময় রক্ত আসে সেগুলোর মধ্যে
ক্যান্সার একটি অন্যতম রোগ ।নিচে যে রোগ গুলি আক্রান্ত হলে পায়খানার সাথে রক্ত
বের হয়ে আসে সে রোগ গুলো দেওয়া হলঃ
- পাইলস
- এনাল ফিসার
- ক্যান্সার
- আলসারেটিভ কেলোইটিস
তাই আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে মলত্যাগের পর বা মলত্যাগের সাথে রক্ত আসলে
অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে ।তাই অবশ্যই এ বিষয়গুলো আপনি খেয়াল রাখবেন।
পাইলস কি ভালো হয় - কি খেলে পাইলস ভালো হয়
আমরা যারা পাইলসে আক্রান্ত হয় তারা অনেকে চিন্তা করি পাইলস ভালো হয় কিনা ।পাইলস
ভালো হয় তবে পাইলস ভালো হওয়ার অনেকগুলো ধরন রয়েছে ।কেননা আপনার পাইলস যদি
প্রথম অবস্থাতে ধরা পড়ে আর আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন অবশ্যই আশা করা যায়
আপনার পাইলস আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যাবে। আর যাদের দীর্ঘদিন পাইলস সমস্যা আছে
তাদের ভালো হতে অনেক সময় লাগে।
আরো পড়ুনঃ জন্ডিস এর লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানুন
কেননা এখানে সময় ও ধরনের উপরে নির্ভর করে আপনার পাইলস ভালো হবে কিনা এবং সেটা
বিবেচনা করে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ।এছাড়াও অপারেশনের মাধ্যমে পাইলস ভালো করা
সম্ভব বর্তমান যুগে অনেক উন্নত চিকিৎসার ফলে পাইলস রোগ ভালো করা যায় ।পাইলস ভালো
হওয়ার জন্য আমাদেরকে কিছু খাওয়া দাওয়া নিয়ম মেনে চলতে হবে ।কেননা আপনার
খাওয়া-দাওয়ার উপরে এ পাইলস ভালো হওয়া না হওয়ার নির্ভর করে ।
পানি পানঃ পাইলসের রোগীকে বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে । কেননা পানি কম
পরিমাণ খাওয়ার জন্য কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্মুখীন হতে হয় ।কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পাইলসের
সৃষ্টি হয় তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা ।
ইসবগুলের ভুষিঃ যাদের পাইলসের সমস্যা আছে তারা খেতে পারেন কেননা এসব গুলো
বসে পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ।
শাকসবজি ও ফলঃ এছাড়াও শাকসবজি ও ভিটামিন জাতীয় ফল খাবার অভ্যাস গড়ে
তুলুন ।কেননা এই শাক সবজি খাওয়ার ফলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকটা কমে যাবে আর
পাইলসহ সম্ভাবনা থেকে মুক্তি পাবেন।
পাইলস হলে কি খাওয়া যাবে না
যে সকল পাইলস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি তাদের খাওয়া-দাওয়া বিষয়ের উপরে বিশেষভাবে
নজর দেওয়া উচিত কেননা আপনার খাওয়া দাওয়া সঠিক নিয়ম যদি না হয় তাহলে আপনার
পাইলস সমস্যা দিন দিন বেড়ে যাবে ।তাই অবশ্যই আপনাকে খাওয়া-দাওয়া দেখে বিশেষ
মনোযোগ দিতে হবে ।চলুন তাহলে জেনে নিয়ে কি কি বিষয়গুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে।
১ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মতে মসলাযুক্ত খাবার পাইলস রোগীদের জন্য নয় ।কেননা এই
অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবারগুলো হজম হতে ও হজম ক্ষমতাকে দুর্বল করে তুলে ।ফলে আপনার
পাইলস এর সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
২ অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার ও প্যাকেটজাত দ্রব্য খাবার এড়িয়ে চলা ।কেননা এ
খাবার গুলো হজম হতে অনেক সমস্যা দেখা দেয় তাই এসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
৩ যাদের পাইলসের সমস্যা আছে তাদের কফি ও চা এ ধরনের খাবার গুলো না খাওয়াই ভালো
।অতিরিক্ত পরিমাণে এগুলো খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য বেড়ে যেতে পারে ।ফলে পাইলসের
সমস্যা দেখা দেয়।
৪ মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত পরিমাণের রক্তক্ষরণ হলে মাংস খাওয়া বাদ দিতে হবে ।
আবার বিভিন্ন দোকানে রেডিমিট বা মাংস জাতীয় খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে।
৫ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে অনেক সময় যদি মাছ ও ডিম খাওয়ার জন্য পাইলসের সমস্যা
বাড়তে পারে । এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এ খাবার গুলো খেতে হবে
কেননা পাইলস সমস্যা খুব ব্যথা যুক্ত হয়ে থাকে।
শেষ কথাঃপাইলস কেন হয়
সম্মানিত পাঠক বৃন্দ আজকে আমরা পাইলস সম্পর্কে পোস্টটি আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি
এই পোস্টটিতে পাইলসের কারণ ও লক্ষণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে । আশা
করা যায় আপনারা এই পোস্টটি পড়ে পাইলস সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা নিতে পারবেন ।যা
আপনাদের জীবনকে আরো সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য ।পাইলস সম্পর্কে আরো কিছু জানতে
এই ওয়েবসাইটের কমেন্টে বক্সে প্রশ্ন করতে পারেন । আরো কিছু অজানা তথ্য জানতে
আমাদের এই ওয়েবসাইট কে নিয়মিত ভিজিট করুন সবাই ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।
NETEINFO ওয়েবসাইটে এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন কেননা প্রতি কমেন্টের রিভিউ করা হয়
comment url