নিপা ভাইরাস - নিপা ভাইরাস রোগের লক্ষণ

এইডস এর লক্ষণ ও প্রতিকার জেনে নিন বিস্তারিত সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি একটি গুরুত্বপূর্ণ নিপা ভাইরাস সম্পর্কে। আসলে ভাইরাসের নাম শুনলেই আমাদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা বা আতঙ্ক সৃষ্টি করে ।
নিপা ভাইরাস

পোস্ট সূচীপত্রঃকেননা পৃথিবীর শুরু থেকে এবং এই অব্দি পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসে এই পৃথিবীতে থেকে অনেক মানুষ মারা গেছেন । আজকে আমরা যে ভাইরাস সম্পর্কে আলোচনা করব সে ভাইরাসের নাম হচ্ছে নিপা ভাইরাস। 

ভূমিকাঃনিপা ভাইরাস

নিপা ভাইরাসের কারণে প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যায় ।আজকের আমরা এই পোস্টটিতে নিপা ভাইরাস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব আপনি যদি নিপা ভাইরাস রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ সম্পর্কে এবং সেই সাথে প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন ।

নিপা ভাইরাস

নিপা ভাইরাস হলো অন্যান্য ভাইরাসের মতো সংঘটিত ও সংক্রমণ । নিপা ভাইরাস বাদুর বাহিত ভাইরাস এ ভাইরাসের সংক্রমনের ফলে বিশ্বে অনেক মানুষ মারা যায় । নিপা ভাইরাসের ফলে বাংলাদেশে অনেক মানুষ প্রাণঘাতী হয়েছে । তবে বিশেষ করে বাংলাদেশ শীতকালীন আবহাওয়াতে এই নিপা ভাইরাস সংক্রমণ বেশি হয়ে থাকে । নিপা ভাইরাসের বৈজ্ঞানিক নাম হলো (Henipavirus) ।


তবে নিপা ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক বা বিশেষ কোন ঔষধ তৈরি হয়নি । সাধারণ চিকিৎসা দিয়ে এ রোগের পদক্ষেপ নেওয়া হয় অনেক সময় ভাইরাসের সংক্রমণ বেশি বৃদ্ধি হলে তখন একটি রোগী মারা যায়। তাই আমাদেরকে শীতকালীন সময়ে নিপা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সজাগ থাকতে হবে। কেননা সাবধানতাই হলো এ ভাইরাস থেকে মুক্তির একমাত্র অবলম্বন পথ ।

নিপা ভাইরাস কেন হয়

নিপা ভাইরাস যেহেতু একটি বাদুর বাহিত রোগ বা ভাইরাস ।তাই বিশেষজ্ঞদের মতে যে সমস্ত এলাকায় বাদুরের আনাগোনা বেশি সেসব এলাকাগুলোকে সাবধানে সাথে কিছু পদক্ষেপ অবলম্বন করা উচিত । কেননা আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ শীতকালীন সময়ে খেজুরের রস পান করে থাকে । এছাড়াও তালের রস পান করে এই খেজুরের রস সংগ্রহ করার সময় যারা গাছ লাগায় গাছের সাথে যে পাত্রটি ঝুলে থাকে ।


সেটা ঢেকে রাখে না ফলে বাদুর সেখানে গাছের সঙ্গে ঝুলে রস খাওয়ার চেষ্টা করে এবং বাদুরের মুখে লালা সহ মলমূত্র ওই পাত্রে গিয়ে পরে এবং সেখান থেকে এ ভাইরাসের জীবাণু সৃষ্টি হয়। তাই বোঝা যাচ্ছে শীতকালীন সময়ে এ খেজুরের রস বা তালের রসের কারণে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণটা চেয়ে বেশি ঘটে । তাই আমাদেরকে অবশ্যই এই সময়টা সাবধান থাকতে হবে ।

নিপা ভাইরাস রোগের লক্ষণ - নিপা ভাইরাসের উপসর্গ

বাংলাদেশ ও তার পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে । এ নিপা ভাইরাসের ফলে বিশ্বে অনেক মানুষ মারা যায় । তাই আমাদেরকে এ ভাইরাস সম্পর্কে জানতে হবে এবং তার সাথে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা এ ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক ভ্যাকসিন বা বিশেষ কোনো ওষুধ এখনো বের হয়নি।আপনার সচেতনতাই পারে এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে চলুন তাহলে নিপা ভাইরাসের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো জানি।
নিপা ভাইরাস রোগের লক্ষণ

নিপা ভাইরাসের লক্ষণ ও উপসর্গগুলোঃ

  • জ্বর ও মাথা ব্যথা
  • বমিও খিঁচুনি
  • মাথা ঘোরা ভাব ও তার সাথে ব্যাথা থাকতে পারে
  • গলা ব্যথা
  • অতিরিক্ত তৃষ্ণা লাগা
  • বেহুশ হয়ে পড়া
  • শ্বাসকষ্ট
নিপা ভাইরাসের ক্ষেত্রে এর লক্ষণ গুলো বেশি পরিলক্ষিত হয় এছাড়া আরো অন্যান্য লক্ষণ থাকতে পারে । অবশ্যই আপনারা এই লক্ষণগুলো পরিলক্ষিত হলে দেরি না করে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন আপনার সচেতন হতে পারে আপনার জীবন কে রক্ষা করতে ভাইরাস থেকে ।

নিপা ভাইরাসের চিকিৎসা - নিপা ভাইরাসের প্রতিকার

এখন আমরা আলোচনা করব নিপা ভাইরাসের প্রতিকার ও ভাইরাসের চিকিৎসা সম্পর্কে । নিপা ভাইরাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভাইরাস আমরা যেহেতু জানি বাংলাদেশ এ ভাইরাসটি ছড়িয়েছে বাদুড়ের মাধ্যমে এবং এই ভাইরাসটি প্রভাব দেখা যায় নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে এক কথায় শীতকালীন মৌসুমী শীতকালীন সময়ে খেজুর রস বা তালের রস পান করার মাধ্যমে ।


কেননা রস চাষিরা যখন গাছে রস লাগায় তাদের পাত্রটা ভালোভাবে সংরক্ষণ করে না ফলে বাদুড়ের লালা ও মলমত্র এ রসে গিয়ে ভাইরাস সংক্রমণ করে থাকে এর ফলে নিপা ভাইরাসটি সৃষ্টি হয়ে থাকে ।

নিপা ভাইরাসের প্রতিকার গুলো দেখে নিনঃ

১ খেজুরের রস খাওয়ার ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই ভালোভাবে সংরক্ষণ করে খেজুরের রস পান করা উত্তম এবং সেই সাথে খেজুরে কাচা রস বা তাড়াতাড়ি না খাওয়াই উত্তম ।

২ খেজুরের রসের তৈরি পিঠা বা অন্য কিছু খেতে হলে অবশ্যই ভালোভাবে টগবগে ফুটিয়ে নেবেন ।

৩ এছাড়াও কোন ফল যেমন পেয়ারা আম পেঁপে জামরুল লিচু ইত্যাদি ফলগুলো ভালোভাবে ধুয়ে খাবেন এছাড়াও কোন ফলে বাদুর খাওয়া থাকলে সে ফল খাবেন না।

৪ কেউ যদি নিপা ভাইরাস আক্রান্ত হয় অবশ্যই তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে দ্রুততার সাথে যোগাযোগ করেন।

নিপা ভাইরাসের আবিষ্কারক কে - নিপা ভাইরাসের বাহক কে

মালয়েশিয়ার নিপা এলাকায় ১৯৯৮ সালে সর্বপ্রথম এই ভাইরাস চিহ্নিত করা হয় এবং ওই এলাকার নাম অনুসারে এই ভাইরাসের নাম দেয়া হয় নিপা ভাইরাস । এ নিপা ভাইরাস মানুষের ছাড়াও মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ শুকুরের দেহে ভাইরাস পাওয়া যায়। যেহেতু শুকুর মানুষেরা দেখাশোনা সেই ফলে এ ভাইরাসটি মানুষের দেহে চলে আসে ।তাই বলা যায় নিপা ভাইরাস সর্বপ্রথম মালয়েশিয়াতে সনাক্ত হয় ।

নিপা ভাইরাস বাংলাদেশ

মালয়েশিয়াতে যখন সর্বপ্রথম 1998 সালে এ নিপা ভাইরাস সনাক্ত হয় । এরপরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটির আবির্ভাব দেখা যায় । নিপা ভাইরাস বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলাতে ২০০১ সালে একজন ব্যক্তির দেহে সনাক্ত করা হয় । তবে বর্তমানে এই মেহেরপুর জেলা ছাড়াও গোটা বাংলাদেশ ৩২৬ জন এ ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে। 


আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৩১ জন নিপা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিরাও মারা যান । তাই এ ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই সচেতনতা অগ্রাধিকার দিতে হবে । এবং উপসর্গ দেখা দিলে নিকটস্থ হাসপাতাল অথবা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা পরামর্শ নিতে হবে ।

নিপা ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়

নিপা ভাইরাস হলো এমার্জিং জোনোটিক ভাইরাস যেটা বিভিন্ন পশু পাখি থেকে মানুষের মধ্যে বিস্তার লাভ করে ।নিপা ভাইরাস মানুষের দেহে মস্তিষ্ক সহ শ্বাসনালী ও শাসনতন্ত্রে উপর মারাত্মকভাবে আঘাত নেয় এবং নিপা ভাইরাস মস্তিষ্কের এনসেফ্যালাইটিস নামক রোগ সৃষ্টি করে থাকে । তাই আমাদেরকে অবশ্যই এ ভাইরাসের প্রতি বেশি করে সচেতনতা বাড়াতে হবে । ভাইরাসটি করোনা ভাইরাসের থেকেও আরো কঠোর । করোনা ভাইরাস যেমন এর সচেতনতার মাধ্যমে ভালো থাকা যায় তেমনি ভাইরাসের ক্ষেত্রেও একই রকম ।

শেষ কথাঃনিপা ভাইরাস

এই বিশ্বে যতগুলো ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে সবগুলোর মূল মন্ত্র হচ্ছে রক্ষা পাওয়ার জন্য সচেতনতা কেননা আপনার সচেতন হতে পারে বিভিন্ন মরণব্যাধি ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে । আজকে আমরা জানলাম নিপা ভাইরাস সম্পর্কে । তাই অবশ্যই আমরা বুঝতে পারছি নিপা ভাইরাসে শীতকালীন সময়ে বিশেষ করে নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে বেশি দেখা যায় ।

এই সময় খেজুরের রস বা তালের রস পান করে থাকলে অবশ্যই সাবধানতার সহিত এবং রস সংরক্ষণ ব্যবস্থা দেখে আপনার গ্রহণ করা উচিত। তাহলে আপনি সুস্থ থাকবেন সবাই ভালো থাকবেন ধন্যবাদ। এরকম আরো অন্যান্য তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

NETEINFO ওয়েবসাইটে এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন কেননা প্রতি কমেন্টের রিভিউ করা হয়

comment url