টক দই খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
দই বানানোর রেসিপি - মিষ্টি দই বানানোর রেসিপিপৃথিবীতে যে সমস্ত খাবার রয়েছে তার
মধ্যে প্রত্যেকটা খাবারে বিশেষ গুণসম্পন্ন আর এর মধ্যে কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো
অনেকগুলো গুণাগুণ সম্পন্ন খাবার । আর তেমনি একটি খাবার হচ্ছে টক দই । কেননা এতে
যে সমস্ত উপাদান রয়েছে মাধ্যমে একজন মানুষের শরীরে প্রয়োজনীয় অনেকগুলো উপাদান
এর মধ্যে বিরাজমান ।
পোস্ট সূচীপত্রঃকেননা এটি একটি দুদ্ধ জাত খাবার দুধ যেমন অনেক পুষ্টিগুণ
সম্পন্ন তেমনি দুধ থেকে তৈরি এই টক দই ও অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ।তাই চলুন আমরা
জেনে আসি টক দই খাওয়ার উপকারিতা সহ এর টক দইয়ের রেসিপি এবং টক দই এর
উপকারিতা ও অপকারিতা ও টক দই খাবার নিয়ম ।
ভূমিকাঃটক দই খাওয়ার উপকারিতা
বর্তমানে মানুষ অনেক ভোজন রসিক ও খাদ্য প্রিয় তবে এর মধ্যেও প্রায় অনেক মানুষ
আছে যারা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার বেশি পছন্দ করেন ।আর এই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার
গুলোর মধ্যে যেগুলো রয়েছে তার মধ্যে প্রধান ও অন্যতম হচ্ছে টক দই । টক দই রয়েছে
অনেক গুনাগুন যেটা খাওয়ার মাধ্যমে একই সাথে যেমন স্বাস্থ্য ঠিক থাকছে ।তেমনি
সেটা স্বাস্থ্য উপযোগী ও হচ্ছে কারণ এতে যে সমস্ত উপাদান রয়েছে তা আপনার শরীরকে
বিভিন্ন অসুস্থতার হাত থেকে বাঁচাবে এবং আপনার শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখতে অত্যন্ত
সাহায্য করবে ।
টক দই রেসিপি
টক দই বানানো অত্যন্ত সহজ ঝামেলা মুক্ত একটি রেসিপি আপনি বাড়িতে বসেই যে কোন
সময় তৈরি করতে পারেন । এর জন্য আপনার যে যে উপকরণগুলো লাগবে তা হলঃ১ লিঃ গরুর
দুধ, টক দই তিন থেকে চার চামচ এবং তিন থেকে চার চামচ গুঁড়া দুধ। তাহলে চলুন জেনে
আসি
প্রস্তুত প্রণালীঃ
- প্রথমে এক লিটার দুধ একটি প্যানে চুলায় বসিয়ে দিন এবং চুলার আঁচ মাঝারি রাখুন ।
- দুধগুলো গরম হতে শুরু করলে এর মধ্যে আস্তে আস্তে তিন থেকে চার চামচ গুঁড়া দুধ মিশিয়ে দিন এবং কিছুক্ষণ পর পর নাড়াচাড়া করতে থাকুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট ।
- এবার দুধ ঘন হওয়া শুরু করলে চুলার আঁচ আরো কমিয়ে দিন এবং এর মধ্যে তিন থেকে চার চামচ টক দই দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন আরো ৫ কাছ থেকে ১০ মিনিট .
- এবার চুলা থেকে দুধের মিশ্রণটি নামিয়ে নিন ও যখন অল্প পরিমান গরম থাকবে তখন একটি মাটির পাত্রে বা যে কোন পাত্রে ঢেলে নেন এবং তিন থেকে চার ঘন্টা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিন তারপর এটি 7 থেকে 8 ঘন্টা সিজে রেখে দিন ।
- এরপর আপনার প্রয়োজন মত পরিবেশন করুন দেখবেন একদম দোকানের টক দয়ের মতোই
- তৈরি হয়েছে আপনার বাড়িতে তৈরি টক দইটি।
টক দইয়ের পুষ্টিগুণ
টক দই অনেক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন কারণ এতে রয়েছে মিনারেল, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি,
বিটামিন বি 6, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম,পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম , উপকারী
ব্যাকটেরিয়া ও লেক্টিক অ্যাসিডযেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও
গুরুত্বপূর্ণ ।
টক দই খাওয়ার উপকারিতা
প্রত্যেকটি খাবারের ই উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে চলুন আমরা জেনে আসি টক খাওয়ার
উপকারিতা সম্পর্কে ।
1. প্রাপ্তবয়স্ক এবং বাচ্চাদের পাচক তন্ত্রের দুর্বলতা সারাতে টক দই অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
2. টক দই খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী ।
3. টক দই শরীরের ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে অত্যন্ত সহায়ক ।
4. শরীরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির ও ত্বক ঠিক রাখতে টক দইয়ের জুড়ি নেই ।
5. ওজন কমানোর জন্য ও বিভিন্ন ডায়েট চাটে টক দই প্রধান খাবার হিসেবে ভূমিকা রাখে
।
6. যাদের পেটে সমস্যা বা আলসার ঘা রয়েছে তাদের টক দই খাওয়ার ফলে এই ঘা ভালো হতে
ও পেটের সমস্যা দূর হতে টক দই খুব উপকার ।
7. যাদের হাটু ব্যথা বা শরীরে ক্যালসিয়াম শট রয়েছে তাদের জন্যও টক দই খুব
উপকারী ।
8. টক দই শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে ।
9. যাদের খাবার হজম হয় না তারা টক দই খেলে দ্রুত খাবার হজম হয় ।
10. টক দই সর্বদা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে ।
টক দই এর উপকারিতা ও অপকারিতা
চলুন এবার আমরা জেনে আসি টক দই য়ের অপকারিতা সম্পর্কে যেকোনো একপ্রকার খাবার
অতিরিক্ত খাওয়া সেটা কখনোই শরীরের জন্য ভালো নয় তেমনি টক দই বেশি পরিমাণে খেলে
অনেক সময় যে সমস্যাগুলো হয় সেগুলো হলঃ
1. শরীরে অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায় ।
2. যাদের দুধে এলার্জি রয়েছে তাদের এলার্জিজনিত সমস্যা বেড়ে যেতে পারে ।
3. টক দইয়ে ল্যাকটোজ এনজাইমের কারণে শরীরে ল্যাপটপ এনজাইমের ঘাটতি হলে সহজে
4 এটি পূরণ হয় না ফলে শরীর ফুলে যেতে পারে এবং গ্যাসের সমস্যা হতে পারে ।
5 তাই দই খেতে হলে পরিণত পরিমাণে দই খাওয়ায় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী ।
টক দই খাওয়ার নিয়ম
যেকোনো খাবার নিয়ম মেনে খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।কেননা আমরা যদি নিয়ম না
জেনে খাবার খায় সেটা সব সময় আমাদের জন্য বা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী নাও হতে
পারে ।সেটা বিভিন্ন প্রকার ক্ষতির কারণও হতে পারে । ও এর ফলে বিভিন্ন পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া বা রোগব্যাধি হতে পারে । তেমন দই খাওয়ার ক্ষেত্রেও কয়েকটি নিয়ম
রয়েছে ।
যেগুলো মেনে দই খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।এগুলো হল:-একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ
প্রত্যেকদিন 200 থেকে আড়াইশো 250 গ্রাম টক দই খেতে পারে।এবং একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক
বা যারা বয়সে ছোট তারা প্রতিদিন ১০০ গ্রাম করে টক দই খেতে পারে । তবে এটি
প্রত্যেকদিন না খাওয়াই উত্তম সব থেকে ভালো হয় । একদিন পরপর খাওয়া আর খাওয়ার
সঠিক সময় হচ্ছে সকালে খাবার পরে এবং দুপুর বেলা মনে রাখতে হবে ।
রাতের বেলা টক দই খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী নয় এবং মনে রাখতে হবে যে টক
দইয়ের সাথে চিনি বা অন্য কোন মিষ্টি জাতীয় খাবার মিশিয়ে না খাওয়াই ভালো
।প্রয়োজনে আপনি সামান্য পরিমাণে লবণ বা বিট লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন।
ওজন কমাতে টক দইয়ের উপকারিতা
ওজন কমানোর জন্য আমাদের ডায়েট চাটে বা খাদ্য তালিকায় যে সমস্ত স্বাস্থ্যসম্মত
খাবার রয়েছে তার মধ্যে টক দই প্রধান এবং অন্যতম । টক দইয়ে যে সমস্ত উপাদান
রয়েছে তা আমাদের শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে নিধন করে এবং প্রয়োজনে
ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে ।এর ফলে শরীরের চর্বি কমতে সাহায্য করে ।এর পাশাপাশি
বাড়তি ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে আমরা এ টক দইটি খেতে
পারি।যেমন: বিভিন্ন সবজির সাথে মিশিয়ে, শসা ও টক দই মিশিয়ে, বিভিন্ন ফলের সাথে
মিশিয়ে, দই এবং গ্রানেলা মিশিয়ে, বাদামের সাথে মিশে, ওটস এর সাথে তোর মিশিয়ে
খেতে পারেন এর মাধ্যমে ওজন দ্রুত কমে ।
ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম
শরীরের ওজন কমাতে টক দই অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে । কিন্তু টক দই খাওয়ার নিয়ম
সম্পর্কে জানতে হবে যে আপনি কিভাবে টক দই খেলে আপনার শারীরিক ওজন কমাতে সাহায্য
করবে । চলুন তাহলে ওজন কমাতে টক দই খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আসি।
সবজি রায়তাঃ টক দইয়ের সঙ্গে হালকা করে পেয়াজ কুচি জিরার গুড়া সামান্য
কাঁচা মরিচ কুচি টমেটো কুচি পরিমাণমতো এবং তার সঙ্গে সামান্য পানি নিয়ে বানিয়ে
নিন রায়তা। এ খাবারটি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে এবং পাশাপাশি শারীরিক ভাবে
উপকৃত হবেন।
চিয়া বীজঃ শরীরের ওজন কমাতে দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে এই চিয়া
বীজ।চিয়া বীজ রয়েছে পটাশিয়াম আয়রন ফাইবার লবণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তাই টক দইয়ের সঙ্গে এই চিয়া বীজ মিশিয়ে খেতে পারেন
তবে সবচেয়ে ভালো হয় টক দয়ের সঙ্গে অন্যান্য ফলমূল হালকা কিছু দুধ এবং পরিমাণ
মতো দই নিয়ে ও সামান্য পরিমাণ চিয়া বীজ ভালো করে মিশ্রণ করে খাওয়া।
টকদের সঙ্গে ফলমূলঃ আপনি যখন ওজন কমাতে যাবেন তখন আপনার শরীরে যথেষ্ট
পরিমাণ পুষ্টির প্রয়োজন রয়েছে । সেজন্য আপনাকে ওজন কমানোর পাশাপাশি পুষ্টির
দিকে দেখতে হবে তাই টক দইয়ের সঙ্গে হালকা পরিমাণ আপেল কলা পেয়ারা ডালিম সামান্য
পরিমাণ তরমুজ মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে আপনার শরীরের প্রচুর পরিমাণ ফাইবার খনিজ
পদার্থ প্রোটিন ও বিভিন্ন ভিটামিন যোগান দিতে সাহায্য করবে ।
আখরোট ও টক দইঃ শরীরের দ্রুত ওজন কমাতে দইয়ের সঙ্গে আখরোট কিংবা ড্রাই
ফ্রুটস খেতে পারেন এমনকি খেজুরও খেতে পারেন । আখরোট বা বাদামে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণ প্রোটিন ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের ফ্যাট ও ক্যালোরি
দূর করতে সাহায্য করে।
টক দই ও গ্রানোলাঃ শরীরের পেটের চর্বি কমাতে গ্রানোলা অনেক বেশি উপকারী।
তাই দই সঙ্গে এই গ্রানোলা মিশিয়ে খেলে লোক্যালোরি যুক্ত খাবার হয় যা আমাদের
শরীরের জন্য লোহার ও সুগার ফ্রি তৈরি হয় তাই ওজন কমাতে সাহায্য করে।
জিরাঃ শরীরের ওজন কমাতে টক দইয়ের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ জিরা মিশিয়ে ১৫
থেকে ২০ দিন খেলে আপনার শরীরের মেদ ঝরতে সাহায্য করবে।
দারচিনিঃ দারচিনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের
শরীরের অনেক সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে তেমনি দারচিনি টক দইয়ের সঙ্গে
মিশিয়ে খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে ।
মৌরিঃ ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে অনেকে মৌরি ভেজানো পানি খেয়ে থাকেন তবে আপনি
যদি মৌরির পানির সঙ্গে টক দই মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে আপনার ওজন কমানো আরো সহজ
হয়ে যাবে। মৌরি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন খনিজ পদার্থ যা আমাদের শরীরে
ওজন কমানোর সময় পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে ।
চুলের যত্নে টক দই এর ব্যবহার - মুখে টক দই এর উপকারিতা
1.টক দই চুলের আদ্রতা বজায় রাখতে উপকারী ভূমিকা পালন করে ।
2. চুলের স্কাল্পের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে টক দই খুব উপকারী ।
3. চুলের খুশকি দূর করতে ওই স্কাল্পের পি এইচ বজায় ডাকতে সাহায্য করে ।
4. মুখের ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর করতে টক দইয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
5. হাতের নখ ও চামড়া সুন্দর রাখতেও টক দই অনেক উপকারী ।
6. এছাড়া তাদের স্কিনে সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য টক দই খাওয়া অত্যন্ত উপকারী
ভূমিকা রাখে ।
রাতে টক দই খেলে কি হয়
আয়ুর্বেদ চিকিৎসা অনুযায়ী রাতে দই খাওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন । এছাড়াও
ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজির মতে টক দই শরীরের টিস্যুর বিপরীত ক্রিয়া করে
থাকে । ফলে আমাদের শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে । চলুন তাহলে রাতে টক দই
খেলে কি কি সমস্যা হতে পারে সে সম্পর্কে জানি ।
আর্থ্রাইটিস বৃদ্ধিঃ আপনি যদি বাতের রোগী হয়ে থাকেন বা বাতে সমস্যা
রয়েছে সেক্ষেত্রে তাদের রাতে দই খাওয়া উচিত নয় কেননা রাত্রে দই খেলে জয়েন্টের
ব্যথা সমস্যা বাড়তে পারে ।
স্থুলতাঃ রাত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে টক দই খেলে স্থূলতার সমস্যা স্থুলতা
দেখা দিতে পারে তাই রাত্রে টক দই খাওয়া যাবেনা।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাঃ অতিরিক্ত পরিমাণ রাতে টক দই খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের
মত সমস্যা হতে পারে তাই রাতে দই না খাওয়াই ভালো ।
কফের সমস্যাঃ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে রাতের বেলা টক দই খেলে অতিরিক্ত
পরিমাণে শরীরে কফ তৈরি হতে পারে এজন্য সর্দি সহ গলা ব্যথা হতে পারে ।
ব্রণের সমস্যাঃ যারা রেগুলার রাত্রে দই খেয়ে থাকেন তাদের জন্য আরেকটি
সমস্যা হলো ব্রণের সমস্যা । রাতের বেলা নিয়মিত দই খেলে ব্রণের সমস্যা হতে পারে ।
বমি হতে পারেঃ অতিরিক্ত পরিমাণ টক দই রাত্রে খেলে পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ
পড়ে ফলে তখন বমি বমি ভাব কিংবা বমিও হতে পারে তাই রাত্রে টক দই না খাওয়াই ভালো
।
টক দই খেলে কি গ্যাস হয়
অনেকে প্রশ্ন করেন যে টক দই খেলে গ্যাস হয় কিনা? এখানে একটা প্রশ্ন সেটা হচ্ছে
টক দই খেলে গ্যাসের সমস্যা দূর হয়ে থাকে । কিন্তু আপনি যদি টক দই দ্বারা গ্যাস
ভালো হয় বলে অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ফেলেন তখন সেটা পরিপাকতন্ত্রের জন্য মোটেও
ভালো না । অতিরিক্ত টক দই খেলে পরিপাকতন্ত্রের উপর চাপ পড়ে ।এছাড়াও আপনার পেট
ব্যথা বমি বমি ভাব বা এসিডিটির মতো সমস্যা দেখা দেয় । তাহলে বুঝতে পারছেন আপনি
যদি টক দই পরিমাণ মতো খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই ।
খালি পেটে টক দই খেলে কি হয়
- আমরা অনেক সময় মনে করি খালি পেটে টক দই খাওয়া যায় না । কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে ধুয়ে রয়েছে ভালো ব্যাকটেরিয়া যেটা আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে তাই খালি পেটে টক দই পরিমাণ মতো খাওয়া যায় ।
- টক দই স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এছাড়াও চুল ও ত্বকের যত্নে টক দই অন্যতম।
- টক দই রয়েছে ক্যালসিয়াম প্রোটিন ভিটামিন বি ৬ ভিটামিন বি১২ এছাড়াও আরো প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সমূহ উপাদান যেগুলো আমাদের শারীরিক সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে ।
- টক দই মূলত দুধ থেকে তৈরি হয় তাই টক দই খালি পেটে খাওয়া যায় কিনা সেটা নিয়ে অনেকে চিন্তা করে থাকেন তাই বিশেষজ্ঞরা টক দই খাওয়ার পরামর্শ অনেক সময় খালি পেটে দিয়ে থাকেন ।
- টক দই হলো এক ধরনের ভালো ব্যাকটেরিয়া প্রোবায়োটিক থাকে যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে ।
প্রতিদিন দই খেলে কি হয়
প্রতিদিন টক দই খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায় কেননা টক দই হচ্ছে দুধ থেকে
তৈরি হলে অনেক ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায় । চলুন তাহলে প্রতিদিন টক দই খেলে
কি উপকার হয় সে সম্পর্কে জানে ।
- আপনি যদি প্রতিদিন টক দই খান তাহলে আপনার শরীরে ভিটামিন ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম প্রোটিন ভিটামিন বি ১২ ম্যাগনেসিয়াম সহ অসংখ্য পুষ্টি উপাদান আপনার শরীরকে চাঙ্গা করে তুলবে তাই প্রতিদিন পরিমাণ মতো টক দই খাওয়া যায় ।
- প্রতিদিন টক দই খেলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় কেননা টক দই রয়েছে ভালো ব্যাকটেরিয়া প্রোবায়োটিক যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এছাড়াও পেট ফোলা বা ডায়রিয়া সমস্যায় টক দই ভালো উপকার পাওয়া যায় ।
- শারীরিক ওজন কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে টক দই অনেক বেশি উপকারী টক দই থাকা প্রোটিন আমাদের পেট ভরার অনুভূতি দিয়ে থাকে যার জন্য আমাদের খিদে কমে যায় ফলে দ্রুত ওজন কমতে সাহায্য করে।
- টক দইয়ে থাকা ম্যাগনেসিয়াম জিং ক এবং সেলেনিয়াম ফলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এছাড়াও রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু বিরুদ্ধে লড়াই করেন।
- আমাদের শরীরের হাড় কে গঠন করতে টক দই খুব উপকারী । টক দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং হাড় গঠন ঘনত্ব করতে সাহায্য করে থাকে।
টক দই এর ক্ষতিকর দিক
টক দই আপনি যদি পরিমাণ মতো খান এবং সময় অনুযায়ী টক দই খেয়ে থাকেন । তাহলে
আপনার ক্ষতিকর দিকসমূহ না হওয়া সম্ভব না সব থেকে বেশি কিন্তু আপনি যদি পরিমাণে
থেকে অতিরিক্ত টক দই খেয়ে থাকেন তাহলে তো আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই ক্ষতি
হবে । রাত্রেবেলা অতিরিক্ত পরিমাণে টক দই খেলে বমি বমি ভাব এছাড়াও ব্রণের সমস্যা
দেখা দিতে পারে । টক দই ঠান্ডা খেলে কাশি বা সর্দির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে ।
এছাড়াও টক দইয়ের কারণে পরিপাকতন্ত্রে ব্যথা অনুভব হতে পারে । তবে টক দইয়ের
ক্ষতিকর দিক কম রয়েছে উপকারী দিক বেশি । অবশ্য মনে রাখবেন টক দই পরিমাণ মতো ও
নিয়মিত সময় অনুযায়ী খেতে হবে ।
টক দই দাম
টক দইয়ের দাম বর্তমান সময়ে বাজার ভেদে তফাৎ থাকে তবুও আমরা কিছু টক দইয়ের
দামগুলো দেওয়ার চেষ্টা করব । কিন্তু যেহেতু এগুলো পচনশীল দ্রব্য তাই টকদের বাজার
উঠানামা করতে পারে সে দায়ভার আমাদের এই ওয়েবসাইটের উপরে নয় আপনি বাজারে গিয়ে
যাচাই-বাছাই করে টক দই কিনবেন ।
- বর্তমান সময়ে বাজারে টক দইয়ের বাজার মূল্য
- এক কেজি টক দই দাম ২২০ থেকে ২৫০ টাকা
- ৫ কেজি টক দইয়ের মূল্য ১১০০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে
- এছাড়াও মহিষের দুধের টক দইয়ের মূল্য হল ২৬০ টাকা থেকে শুরু করে ২৯০ টাকার মধ্যে প্রতি কেজি
- সময়ের প্রেক্ষিতে টক দই য়ের বাজার মূল্য উঠানামা করতে পারে বা কম বেশি হতে পারে সেটা আপনি যাচাই করে কিনে নেবেন ।
আড়ং টক দই দাম
আপনারা অনেকে আড়ং টক দইয়ের দাম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন চলুন তাহলে আমরা আড়ং
টক দইয়ের মূল্য দেখিঃ
- ৫০০ গ্রাম টক দই য়ের বাজার মূল্য ৮০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা
- এক কেজি টক দইয়ের মূল্য ১৬০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা
- ২ কেজি টক দইয়ের মূল্য ৩২০ টাকা থেকে 400 টাকা
- 5 কেজি টক দইয়ের মূল্য ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার টাকা হতে পারে
- আপনারা যারা ক্রেতা রয়েছেন তারা যে সময় কিনবেন তখন গিয়ে বাজার যাচাই-বাছাই করে দেখেশুনে টক দই কিনবেন ।
সাধারণ প্রশ্নাবলী(FAQ)
প্রশ্নঃ টক দই খেলে কি উপকার পাওয়া যায়?
উত্তরঃ আপনি যদি নিয়মিত ও পরিমান মত টক দই খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনি উপকৃত
হবেন কেননা টক দই রয়েছে ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম প্রোটিন
প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া সহ নানান উপকারী উপাদান সমূহ ।
প্রশ্নঃ কাদের টক দই খাওয়া উচিত না?
উত্তরঃ টক দই খাওয়া অনেকের জন্য ভালো আবার অনেকের জন্য সমস্যা রয়েছে যেমন যাদের
বাত ব্যথা রয়েছে অর্থাৎ জয়েন্টে ব্যথা বেশি পরিমাণে তাদের টক দই খাওয়া ঠিক না
এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণে এসিডিটি থাকলে বা গ্যাসের সমস্যা থাকলে টক দই খাওয়া
ঠিক না ।
প্রশ্নঃ নিয়মিত টক দই খেলে ওজন কমানো যায়?
উত্তরঃ আপনি যদি নিয়মিত টক দই খান তাহলে আপনার শারীরিক ওজন কমতে ও নিয়ন্ত্রণ
করতে সাহায্য করবে ।
প্রশ্নঃ টক দই রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করা যায়?
উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই আপনি টক দই রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রশ্নঃ টক দই খাওয়ার সঠিক সময় কখন?
উত্তরঃ টক দই খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে সকাল বেলা। আপনি যদি সকালে টক দই খেতে
পারেন তাহলে আপনার ওজন কমানো সহ অন্যান্য উপকারগুলো পাবেন ।
শেষ কথাঃটক দই খাওয়ার উপকারিতা
বর্তমানে আমরা অনেক স্বাস্থ্য সচেতন তাই স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে টক দই অনেক
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।এ পোস্টটিতে আমরা জানলাম টক দই সম্পর্কে এর
বিভিন্ন গুনাগুন, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে যার মাধ্যমে টক দই আমরা কিভাবে
খাব এবং কতটা পরিমাণ খাব তার সবই জানতে পেরেছে।
তাই টক দই সম্পর্কে জানতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন টক দই
সম্পর্কে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই আমাদের জানাবেন।এছাড়া আরো অন্যান্য
বিষয়ে জানতে ও আমাদের নতুন পোস্টগুলো পেতে আমাদের পেজটির সাথে থাকুন এবং আমাদের
পেজটি ফলো করুন ধন্যবাদ ।
NETEINFO ওয়েবসাইটে এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন কেননা প্রতি কমেন্টের রিভিউ করা হয়
comment url