কুয়েত ভিসা - কুয়েতে সর্বনিম্ন বেতন কত বিস্তারিত জানুন
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায় ২০২৪আপনি কি কুয়েতে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা
করছেন। আজকে আমার আলোচনা করতে চলেছি কুয়েতের প্রবাসীদের জন্য কোন কাজগুলো বেশি
চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া কুয়েতে এসে যেসব প্রবাসীরা কাজ করে তাদের সর্বনিম্ন বেতন
কত সে সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনি যদি কুয়েত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক
জায়গা পেয়েছেন জানার জন্য।
পোস্ট সূচিপত্রঃতাহলে চলুন আজকের এই পোস্টে মনোযোগ সহকারে পড়ে আমরা কুয়েতের
বিভিন্ন কাজ ও বেতন সম্পর্কে জানি ।
ভূমিকাঃকুয়েতে সর্বনিম্ন বেতন কত
সম্মানিত পাঠক কুয়েত হল মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ
সমৃদ্ধশালী দেশ। কুয়েতে বিভিন্ন জায়গাতে প্রতিবছর অসংখ্য বাইরের দেশ থেকে
শ্রমিক নিয়ে থাকে। ফলে আমাদের দেশে অনেকে সেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়।
তাছাড়া কুয়েতে তেলের জন্য উন্নত একটি দেশ। তাই প্রবাসে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে
অবশ্যই নিজের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ।
এবং সে অভিজ্ঞতার আলোকে আপনাকে বিদেশে গিয়ে কাজ করতে হবে। আপনার যদি কাজের
অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে আপনি সে কর্মসংস্থানে গিয়ে হতাশে ভুগতে পারেন। আবার সে
দেশে কোন কাজে চাহিদা বেশি এবং বেতন কত এগুলো না জানলে আপনি সেখানে গিয়ে হতাশে
পড়তে পারেন তা আজকে আমরাই আর্টিকেলতে কোন কাজে চাহিদা বেশি এবং কোন কাজের বেতন
কত হতে পারে সে সম্পর্কে জানতে পারবেন।
কুয়েতে যে কাজের চাহিদা বেশি
কুয়েত যেহেতু তেল সমৃদ্ধদেশ সেখানে কুয়েতের প্রধান অর্থনৈতিক হল তেল এ তেলের
জন্য সেখানে অনেক শিল্প-কারখানা আছে এছাড়াও সেখানে গ্যাসের জন্য তাদের অর্থনীতি
আরও সমৃদ্ধশালী তাই এই তেল ও গ্যাসের উপরে অনেক শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়ে থাকে ।
তাই এ নিয়োগ গুলো বেশিভাগ বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক সেখানে যেয়ে
থাকে ।
- পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং, ডি লিংক অপারেশন, পাইপ লাইনের প্রকল্প এছাড়াও বিভিন্ন দক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে ।
- বর্তমান সময়ে প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পেশাদার চিকিৎসক বা নার্স ও ফার্মাসিস্ট চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে । জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে এ স্বাস্থ্য খাতেও জনবল বাহির থেকে নিয়ে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে । আপনি যদি একজন অভিজ্ঞ পেশাদার হন তাহলে কুয়েতে চাকরি করতে পারেন ।
- বর্তমান বিশ্ব এখন ডিজিটালের ছোঁয়া লেগেছে তাই এই ডিজিটাল সেবা ক্ষেত্রেও আপনি যদি দক্ষ হন তাহলে অবশ্যই আইসিটি সেক্টরে সেখানে কাজ করতে পারেন । বর্তমানে কুয়েতে আইসিটি কাজের সংখ্যাও বেড়েছে ।
- প্রযুক্তি আমাদের এই যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন বিষয়ে পৃথিবীতে হাতের মুঠে নিয়ে এসেছে তাই নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এছাড়াও প্রযুক্তি বিষয়ে বিভিন্ন সেক্টরে সেখানে কাজ করার সুযোগ রয়েছে । এর জন্য আপনাকে অবশ্যই এক্সপার্ট লেভেলের দক্ষতা অর্জন করতে হবে । বর্তমানে কুয়েতের এই ডিজিটাল সেক্টরে অনেক মানুষ কাজ করছে এবং সেখান থেকে ভালো পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে ।
- কুয়েতে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এখানে শিক্ষক, পাঠ্যক্রম এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে এসাইনমেন্ট তৈরি করা সহ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা গঠনের জন্য কুয়েত সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন । কুয়েতে চাকরির বাজারে যেসব শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয় আপনি যদি যোগ্য কাজের উপরে দক্ষতা থাকে অবশ্যই তার সঠিক মূল্য পাবেন ।
- এবং এর জন্য আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি ও আরবি ভাষা জানতে হবে । কেননা কুয়েতের ভাষা হচ্ছে আরবি সেখানে কারা যোগাযোগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অফিস আদালত এ দুইটি ভাষায় ব্যবহার হয়ে থাকে ।
- এছাড়াও কুয়েতে তেলের বাজারে বিভিন্ন ধরনের নিয়োগ হয়ে থাকে । কেননা কুয়েত হচ্ছে তেল সমৃদ্ধ একটি দেশ । আবার কুয়েতে অনেক ক্ষেত্রে অফিস সহকারে অথবা বিদেশীদের পরিচালনা ক্ষেত্রে হেলথ ডেস্ক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে থাকে।
- কুয়েতের আরেকটা অন্যতম কাজের জায়গা হল ড্রাইভিং করা আপনি যদি পেশাদার ড্রাইভিং করতে পারেন । প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ কুয়েতে এ ড্রাইভিং দক্ষতা নিয়ে অনেক পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে ।
- কুয়েতে আরো কিছু চাকরির বাজারে নিয়োগ হয় যেগুলো ক্ষেত্রে যেমন বিভিন্ন সবকিপার হিসেবে আবার বিভিন্ন রেস্তোরায় ।
উপরোক্ত যেগুলো কাজের আলোচনা করা হয়েছে সেসব কাজের বেতন কাজের মানের উপরে নির্ভর
করে থাকে । তবে অফিস আদালত সহকারী হিসেবে বা রেস্তোরাঁ বিভিন্ন কাজ করার পর এক
মাসে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬০ হাজার থেকে 70 হাজার বেতন আসে । তবে যারা
ইলেকট্রিশিয়ান এবং ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত আছে তারা মাস শেষে ভালো টাকা ইনকাম
করে থাকে । আপনি যদি কুয়েত যেতে চান তাহলে অবশ্যই যে সকল কাজগুলো আলোচনা করা
হয়েছে তার উপরে পেশাদার হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকা লাগবে ।
কুয়েতে সর্বনিম্ন বেতন কত ২০২৪
কুয়েতে বাংলাদেশ ছাড়াও আরো অনেক দেশের মানুষ সেখানে গিয়ে ভালো পরিমাণে টাকা
ইনকাম করে থাকে। কুয়েতে কাজের উপর নির্ভর করে শ্রমিকদের বেতন দেয়া হয় প্রতিদিন
আট ঘন্টা করে যে কোন কাজে ডিউটি থাকে ।তবে এখানে আপনি যদি অতিরিক্ত সময় কাজ করে
থাকেন তাহলে অবশ্যই তারা ওই অতিরিক্ত কাজের মূল্য দিয়ে থাকে । যা মাস শেষে আপনার
ইনকামের পরিমাণ আরো বেশি পরিমাণে হয় ।
কোম্পানির মালিকেরা শ্রমিকদের খরচ বহন করে থাকেন কিন্তু শ্রমিকদের খাবার সহ
অন্যান্য খরচ শ্রমিকদের নিজেদেরকে বহন করতে হয় । একজন শ্রমিক মাস শেষে
বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ইনকাম করে থাকে । কুয়েত সরকারের
একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন হিসেবে ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা রয়েছে ।
তবে কোন শ্রমিক যদি কোন কাজের উপরে পুরোপুরি পেশাদার দক্ষতার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে
সে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন । তবে কুয়েতে বিভিন্ন ধরনের কাজের
উপর নির্ভর করে বেতন দেয়া হয়ে থাকে যেটা আমরা সকলেই জানি । তবে সেখানে ওভারটাইম
করে আপনি আপনার বেতন পরিমাণ আরো বাড়াতে পারেন ।
কুয়েতে শ্রমিকদের বেতন কত
কুয়েতে শ্রমিকদের বেতন তাদের কাজের উপর নির্ভর করে দেওয়া হয়ে থাকে । তবে একজন
কুয়েতের শ্রমিক কাজের মজুরি হিসেবে ১৩০ থেকে ২০০ দিনার বেতন হিসেবে পেয়ে থাকেন
। যেটা বাংলাদেশের টাকায় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা । তবে অনেক কোম্পানি
রয়েছে যেসব কোম্পানি তাদের শ্রমিকদের খাওয়া-দাওয়া খরচ বহন করে থাকে ।
কুয়েত ড্রাইভিং ভিসা বেতন কত
আপনি যদি ভাল ডাইভিং পারেন এবং ডাইভিং ভিসাতে কুয়েত জান তাহলে আপনার এ ড্রাইভিং
এর উপর কেমন পরিমাণ মাসে ইনকাম করা যায় সে সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত । আপনি যদি
পেশাদার সাথে ডাইভিং পারেন অবশ্যই আপনার বেতন বেশি হবে । আপনার কাছে যদি ড্রাইভিং
লাইসেন্স থাকে আপনি তাহলে মাসে বাংলাদেশি টাকায় ৬০ থেকে ৯০ হাজার বেতন পেতে
পারেন । তাই বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে ড্রাইভিং ভিসার জন্য আবেদন করলে অবশ্যই আপনার
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন হবে ।
কুয়েতে ক্লিনারের বেতন কত
আমরা আগে আলোচনা করেছি কুয়েতে আপনার কাজের উপর নির্ভর করে বেতন দেয়া হয়ে থাকে
। তবে বাংলাদেশ থেকে যারা কুয়েতের শ্রমিক হিসেবে যান আর সেটা যদি ক্লিনার হিসেবে
যান তাহলে তাদের বেতন দক্ষতার উপর নির্ভর করে বাংলাদেশে টাকায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার
প্রায় হয়ে থাকে । এছাড়াও যদি ওভারটাইম করা যায় তাহলে আপনার বেতন আরো বেশি
হয়ে থাকে।
কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি
কুয়েতে প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়ে
থাকে । তবে শ্রমিক গুলো বিভিন্ন কাজের উপর দক্ষতা যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ দেয় ।
তবে কুয়েতে অনেক ধরনের কাজ রয়েছে । তাই আপনি যদি কুয়েত যেতে চান বেশ আপনি যে
কাজ করবেন উপরে আপনার দক্ষতা থাকা উচিত । নিচে যে কাজগুলোর উপর কুয়েতের প্রতি
বছর শ্রমিক নিয়ে থাকে । সেগুলো হলঃ
- ড্রাইভিং
- ফুড কোম্পানি
- শিল্প ফ্যাক্টরি
- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- ক্লিনার
- রেস্টুরেন্ট ম্যানেজমেন্ট
- অফিস সহকারি
- শিক্ষক
- রাজমিস্ত্রি
- ঢালাই কাজ করা
- প্রকৌশলী
- হোটেল মোটেল
- ট্যুর গাইড
এছাড়াও আরো অন্যান্য কাজে কুয়েত সরকার অনেক শ্রমিক নিয়ে থাকে । তাই আপনি যদি
কুয়েতে যেতে চান তাহলে অবশ্যই নির্ধারিত কাজের উপরে আপনার দক্ষতা থাকা লাগবে
তাহলে আপনি কুয়েতে গিয়ে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন ।
সাধারণ প্রশ্নাবলী(FAQ)
প্রশ্নঃ কুয়েতের রেস্টুরেন্টের ভিসার বেতন কত?
উত্তরঃ কুয়েতে রেস্টুরেন্ট বা হোটেল ভিসা বেতন ৬০ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার
মধ্যে হয়ে থাকে এর মধ্যে কাজের উপর নির্ভর করে ও অভিজ্ঞতার আলোকে বেতন আরও
বাড়তে পারে । কুয়েতে রেস্টুরেন্টের সর্বনিম্ন ৮০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া যায় ।
প্রশ্নঃ কুয়েতে ভিসার দাম কত ২০২৪?
উত্তরঃ বাংলাদেশ থেকে মূলত তিনটি ক্যাটাগরিতে কুয়েতে কাজে যেতে পারেন তার মধ্যে
আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা নিয়ে কুয়েতে যেতে চাইলে পাঁচ থেকে সাত
লক্ষ টাকা মত লাগতে পারে প্রায় ।
প্রশ্নঃ কুয়েতে সপ্তাহে কতদিন কাজ করা লাগে?
উত্তরঃ কুয়েতে সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করা লাগে একদিন বন্ধ থাকে তবে আপনি চাইলে
ওভারটাইম করতে পারেন এর জন্য প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪ ঘন্টা ওভারটাইম বা তার বেশি করা
যায় ।
শেষ কথাঃকুয়েতে সর্বনিম্ন বেতন কত
সম্মানিত পাঠক আপনারা যারা কুয়েত যেতে চান তাদের জন্য এই পোস্টটি খুব
গুরুত্বপূর্ণ । কেননা আজকের এই পোস্টটিতে কুয়েত শ্রমিক নিয়োগ ও বেতন সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে । তাই আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি যে কাজের উপর
নির্ভর করে যাবেন সে কাজটি যেন পেশাদার হিসেবে করতে পারেন । তাহলে আপনি প্রবাসে
গিয়ে ভালো পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবেন । আমাদের এই পোস্টটি ভালো
লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
NETEINFO ওয়েবসাইটে এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন কেননা প্রতি কমেন্টের রিভিউ করা হয়
comment url