ফ্যাটি লিভার কেন হয় - ফ্যাটি লিভার হলে কি খাওয়া উচিত

বর্তমান সময়ে একটি কমন সমস্যা বা সচরাচর সবার মুখে শোনা যাচ্ছে ফ্যাটি লিভার রোগ সম্পর্কে । বিশ্বের অনেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত এবং ফ্যাটি লিভারের রোগী সংখ্যা দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে ফ্যাটি লিভার মূল কারণ হলো অনিয়মিত জীবনযাপন করা ।
ফ্যাটি লিভার কেন হয়

পোস্ট সূচিপত্রঃআমাদের লিভারে চর্বি জমার মূল কারণ হচ্ছে ফ্যাটি লিভার । ফলে আমাদের দেহ লিভার যে পরিমাণ কাজ করার কথা ছিল তা করতে পারে না । ফ্যাটি লিভার প্রাথমিক অবস্থায় আপনি যদি তার চিকিৎসা না করেন তবে দিন দিন তার সময়ের ব্যবধানে জটিল আকার সৃষ্টি হতে পারে । ফ্যাটি লিভার থেকে লিভার সিরোসিস , ক্যান্সার , হেপাটাইটিস , ফাইব্রোসিস হতে পারে । এছাড়াও অনেকের মধ্যপানের অভ্যাস রয়েছে যার কারণে তাদের অ্যালকোহল ফ্যাটি লিভার রোগটি হয়ে থাকে ।

মদ্যপানের ফলে আমাদের লিভারকে সরাসরি ক্ষতি করে থাকে। তাই সকলেরই মধ্যপান কে পরিহার করা উচিত । ফ্যাটি লিভার হওয়ার আরেকটা কারণ হলো শারীরিক পরিশ্রম পর্যাপ্ত পরিমাণে না করা । এছাড়াও ভাত রুটি ও আলু তে রয়েছে উচ্চ কার্বনযুক্ত যার ফলে আমাদের ফ্যাটি লিভার সমস্যা হয়ে থাকে । যারা ডায়াবেটিস রোগ আক্রান্ত আছে তাদের ফ্যাটি লিভার ঝুঁকি সব থেকে বেশি এছাড়াও যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদেরও ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে ।

তাই ফ্যাটি লিভার রোগ থেকে বাঁচার জন্য অলস জীবনযাপন বাদ দিয়ে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে কিছু না হলে প্রতিদিন সকালে নিয়মিতভাবে ব্যায়াম করা উচিত। মনে রাখবেন ফ্যাটি লিভার শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে ভালো হওয়া সম্ভব প্রাথমিক অবস্থায়।

ফ্যাটি লিভার কেন হয়

ফ্যাটি লিভার কেন হয় তা অনেকেই জানেন আবার অনেকে ই জানেন না। ফ্যাটি লিভার বলতে বোঝায় লিভারে বা যকৃতে চর্বির উপস্থিতি কে। সাধারণত যারা মদ্যপান বেশি করে থাকে তাদের ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ে অনিয়মিত জীবনযাত্রা ফলে প্রায় মানুষেরই ফ্যাটি লিভার হচ্ছে যাকে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিস বলা হয়ে থাকে । ফ্যাটি লিভার হওয়ার কারণ বা কেন ফ্যাটি লিভার হয় তা আমাদের জানতে হবে। চলুন তাহলে ফ্যাটি লিভার কেন হয় সে সম্পর্কে জেনে আসি ।
  • শরীরে চাহিদা থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালরি গ্রহণ করা ।
  • কোন প্রকার শারীরিক পরিশ্রম ছাড়া জীবন যাপন করা ।
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে চলাফেরা করলে ।
  • অতিরিক্ত মদ্যপান করা ।
  • যাদের ডায়াবেটিস আছে টাইপ ২ তাদের ফ্যাটি লিভার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ।
  • এমন কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলো পার্শ্বপ্রতিকরা হিসেবে ফ্যাটি লিভার হতে পারে।

ফ্যাটি লিভার হলে কি সমস্যা হয়

ফ্যাটি লিভার হলে প্রাথমিক অবস্থায় সনাক্ত করা একটু কঠিন ।কেননা প্রাথমিক অবস্থায় পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া ফ্যাটি লিভার সনাক্ত করা যায় না ।শরীরে প্রথমের দিকে তেমন কোন উপসর্গ দেখা দেয় না । তবে এবার ফ্যাটি লিভারের মাত্র যখন বেশি হয় তখন বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা তৈরি হয় । যেমন শরীরে হঠাৎ করে ওজন কমে যায় বা বেড়ে যায় , অনবরত বমি বমি ভাব দেখা যায় । পেটে হজমের সমস্যা ও অ্যালার্জি ভাব দেখা যায় । মুখে দুর্গন্ধ হওয়া ও তার সাথে মাথা ব্যথা করা এবং ঘুমের সমস্যা হয়। সাধারণত ফ্যাটি লিভার আক্রান্ত হলে পেটের ডান দিকে ব্যথা অনুভূতি হয় ।

ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ গুলো কি কি

বর্তমান সময়ে দিন দিন ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে ফলে এর মধ্যে আমাদের অনেকেরই ফ্যাটি লিভার হয়ে গেছে কিন্তু আমরা জানি না । আজকে আমরা ফ্যাটি লিভারের লক্ষণগুলো সম্পর্কে আলোচনা করব । আপনি যদি ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচের অংশটুকু ভালো করে পড়ুন । কেননা আপনার সাবধান হতে পারে রোগমুক্তি অন্যতম কারণ । চলুন তাহলে ফ্যাটি লিভার লক্ষণগুলো জেনে আসি ।
  • যারা অনিয়মিত খাদ্য অভ্যাসে অভ্যস্ত তাদের ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি বেশি কেননা অনিয়মিত কারণে লিভারের উপরে চাপ পড়ে ফলে আমাদের হজম সমস্যা তৈরি হয় এবং সে সঙ্গে খাবারের প্রতি অরুচিবোধ সৃষ্টি হয় ।
  • ফ্যাটি লিভার অন্যতম লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব সৃষ্টি হয় কোনো কারণ ছাড়াই এই বমি বমি ভাব দেখা যায় ।
  • ফ্যাটি লিভারের কারণে অনেকের পেট ফুলে যেতে পারে এবং পেটের ডান দিক থেকে ব্যথা অনুভব হতে পারে যেটা ফ্যাটি লিভারের অন্যতম লক্ষণ ।
  • যাদের ফ্যাটি লিভারের জন্য পেট ফুলে যায় এবং তার সাথে শরীরে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খোলা ভাব লক্ষ্য করা যেতে পারে ।
  • কোন কারণ ছাড়াই শারীরিক ওজন বেশি কমে যেতে পারে আবার বেড়ে যেতে পারে যা ফ্যাটি লিভারের অন্যতম লক্ষণ ।
  • মাথা ব্যথা আমাদের অনেকেরই সমস্যার মধ্যে একটি অন্যতম সমস্যা তাই ফ্যাটি লিভার কারণেও আপনার মাথা ব্যথা হতে পারে এছাড়াও ডিপ্রেশন বা মন খারাপ এগুলো লক্ষণ হিসেবে ধরা যায় ।
  • যাদের মেদ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে তাদের ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি বেশি । অনেক সময় দেখা যায় কোমরের থেকে ভুঁড়ি মাপ বেশি হয়ে গেছে ।
  • ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হলে শারীরিক দুর্বলতা সহ ক্লান্তি ভাব দেখা যায় । এ সময় কোন কাজ করতে ইচ্ছা করে না এরকম লক্ষণও দেখা যায় ।
  • এ রোগে আক্রান্ত হলে আরো অন্যতম লক্ষণ হল গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা । কোন কারণ ছাড়াই মাঝেমধ্যে আপনার গ্যাসের সমস্যা হতে পারে ।
  • ফ্যাটি লিভার রোগের অন্যতম লক্ষণ হলো ত্বকের বিভিন্ন চুলকানি সৃষ্টি হওয়া কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ত্বক চুলকানি সৃষ্টি হয় ।
  • এছাড়াও ফ্যাটি লিভার রোগ হলে প্রস্রাব হলুদ এবং তার সঙ্গে দুর্বলতা এবং বমি বমি ভাব লক্ষ্য করা যায় 

ফ্যাটি লিভার কি ভালো হয়

আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ফ্যাটি লিভার কি ভালো হয়? ফ্যাটি লিভার ভালো করা সম্ভব যদি আপনি প্রাথমিক অবস্থা থেকে ফ্যাটি লিভার সম্পর্কে জানার পর সেগুলো মেনে চলেন এবং জীবনযাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখেন তাহলে অবশ্যই ফ্যাটি লিভার ভালো হয় । তবে আমরা অনেকে ফ্যাটি লিভার জানার পরেও আমাদের জীবন যাপনের ক্ষেত্রে বেশ উদাসীন অর্থাৎ নিয়ম করে আমরা চলাফেরা করতে পারি না যার ফলে ফ্যাটি লিভার প্রাথমিক অবস্থা থেকে দিন দিন জটিল পর্যায়ে চলে আসে । ফ্যাটি লিভার ভালো করার জন্য আপনাকে নিজের প্রতি বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে ।

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায়

ফ্যাটি লিভার ভালো করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে কিছু না হলেও প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত কেননা প্রাথমিক পর্যায়ের ফ্যাটি লিভার শারীর িক পরিশ্রমের মাধ্যমে ভালো হয়ে থাকে ।
  • শারীরিক ওজন কমাতে হবে যাদের ওজন হাইট অনুযায়ী বেশি রয়েছে তারা অবশ্যই নিজের ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে কেননা ফ্যাটি লিভার হওয়ার অন্যতম কারণ হলো ওজন বৃদ্ধি পাওয়া ।
  • যাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে মেদ রয়েছে তাদেরকে মেদ ঝরাতে হবে । কেননা মেদ কারণে ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে ।
  • অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে অর্থাৎ আপনাকে খাবার সময় খেতে হবে সকালে খাবার দুপুরে খেলে চলবে না নিয়ম অনুসারে তিন বেলা সময় করে খেতে হবে ।
  • ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে কেননা এই খাবারগুলো খেলে আপনি ফ্যাটি লিভার হবে আক্রান্ত হতে পারে তাই যত সম্ভব এগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে ।
  • ফ্যাটি লিভারের এড়াতে খাবারের তালিকায় বেশি করে শাকসবজি ও ফলমূল রাখতে হবে ।
  • যাদের মদ্যপান অভ্যাস আছে তারা আজ থেকেই মদ্যপান পরিহার করুন । কেননা অতিরিক্ত মদ্যপানে ফলে ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
  • আপনি যদি ফ্যাটি লিভার হবে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্য আপনাকে একজন গ্যাস্ট্রোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে । কেননা ফ্যাটিলিভার সাধারণ থেকে জটিল হওয়া সম্ভাবনা বেশি হয়ে থাকে।
  • আমাদের মধ্যে অনেকেরই অকারনে অর্থাৎ ছোটখাটো বিষয়ে ওষুধ খেয়ে থাকি তাই এ ওষুধগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং হারবাল ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে কেননা ওষুধের সাইড ইফেক্ট ফলে ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে ।

ফ্যাটি লিভারের খাদ্য তালিকা

আমাদের মধ্যে অনেকে ফ্যাটি লিভার হলে খাবার সম্পর্কে নিয়মকানুন মেনে চলার চেষ্টা করেন এবং তাদের কি কি খাওয়া যাবে এবং কি কি খাওয়া যাবেনা সে সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করেন আজকের এই আর্টিকেলতে আমরা ফ্যাটি লিভারের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করব আপনি যদি ফ্যাটি লিভার খাদ্য তালিকা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চান তাহলে নিচের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পুড়ন ।
ফ্যাটি লিভারের খাদ্য তালিকা

ফ্যাটি লিভার হলে কি খাওয়া উচিত

আমরা যারা ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হয়েছে তাদের ফ্যাটি লিভার ভালো করার জন্য সব খাবারগুলো গ্রহণ করা উচিত নয় কেননা ফ্যাটি লিভার রোগ হলে আপনি সব খাবারগুলো খেতে পারবেন না তখন আপনাকে বেছে অর্থাৎ খাবার নির্বাচন করে খেতে হবে চলুন তাহলে ফ্যাট লেবার হলে কোন খাবারগুলো আপনার খাওয়া উচিত সে সকল খাবারগুলো নিচে ভালো করে দেখে নিন ।

সবুজ শাকসবজিঃ সবুজ শাকসবজি আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী কেননা সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে পলি ফেনাল এবং নাইট্রেট যা আমাদের ফ্যাটি লিভার ভালো করতে সাহায্য করে । তাই বলা যায় ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হলে বেশি করে শাকসবজি খেতে হবে ।

ডাল এবং বীজজাতীয় খাবারঃ মসুরের ডাল কিংবা ছোলার ডাল এগুলো সকল ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার আমাদের শরীরের এই খাবারগুলো পাচনতন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পাশাপাশি আমাদের ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে । এর পাশাপাশি সয়া প্রোটিন ও টফুও শরীরের জন্য বেশ উপকারী ।সয়া তে বিদ্যমান থাকে বিটা-কংলাইসিন ট্রাইগ্লিসারাইড যা ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে । এছাড়াও সূর্যমুখী বিচি ভিটামিন ই সমৃদ্ধ এবং আমাদের ফ্যাটি লিভারের জন্য বেশ উপকারী ।

সামুদ্রিক মাছঃ সামুদ্রিক মাছের প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ তেল প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় । সামুদ্রিক মাছ রয়েছে ভালো এইচডিএল কোলেস্টেরল এবং খারাপ ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে । এর ফলে লিভারের চর্বি ও প্রদাহ কমতে থাকে । সামুদ্রিক মাছের মধ্যে টোনা স্যামন সাডেন রূপচাঁদা ইত্যাদি মাছ খাওয়া যায় ।

ওটস এবং জটিল কার্বোহাইড্রেটঃ আপনার ফ্যাটি লিভার কমাতে জটিল কার্বোহাইড্রেট খাবার খেতে হবে । যেমন লাল আটা রুটি ।

বাদামঃ বাদাম আমাদের খাবারের মধ্যে একটি অন্যতম সুষম খাবার আপনার খাবার তালিকায় প্রত্যেক দিন কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ পিস বাদাম খাওয়া উচিত বাদাম খেলে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায় এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে তাই বাদাম খাওয়া যায় ।

লেবু টক দইঃ আমাদের শরীর থেকে আমরা যতটা টনিক্স বের করতে পারবো আমাদের লিভার তথ্য সুস্থ থাকবে তাই আপনি দিনে কয়েকবার হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন এবং আপনার খাবার তালিকায় টক দই অন্তর্ভুক্ত করুন কেননা টক দই প্রোবায়োটি হিসেবে ক কাজ করে.

মসলা পাতিঃ কাঁচা হলুদ আমরা সকলে চিনি এই কাঁচা হলুদে রয়েছে কালকিউ মিন যা আমাদের লিভারের জন্য খুব উপকারী তা লিভারের উপকারিতার জন্য রাতে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে পরিমাণ মতো হলুদ গুলিয়ে খেতে পারেন এছাড়াও তাছাড়া লিভারের জন্য ভালো উপকারী।

ফ্যাটি লিভার হলে কি খাওয়া উচিত না

চিনিঃ ফ্যাটি লিভার হলে আপনাকে চিনি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কেননা ফ্যাটি লিভারের সবচেয়ে মারাত্মক খাবার হল চিনি । সরাসরি চিনি বা চিনি যুক্ত খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে হবে এছাড়াও কোমল পানীয় সেগুলো খাওয়া যাবে না এগুলো বাড়াতে সাহায্য করে ।

ভাজা জাতীয় খাবারঃ ফাস্টফুড বা ভাজা জাতীয় খাবার থেকে নিজেকে দূরে রাখুন যেমন ফিস ফ্রাই ফুচকা চটপটি চিকেন পাকোড়া সিঙ্গারা কুড়ি ইত্যাদি খাবার গুলো উচ্চ তাপমাত্রায় ভাজা হয় যেগুলো আমাদের লিভারের পক্ষে একদমই ভালো না তাই এগুলো খাবার থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে ।

লবণঃ রান্না করার সময় আমাদেরকে লবণের ব্যবহার পরিমানে কমিয়ে আনতে হবে এবং সেই সঙ্গে কাঁচা লবণ খাওয়া যাবেনা তাই ফ্যাটি লিভারের হাতে লবণের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে ।

শর্করাঃ বর্তমানে সাদা ভাত সাদা ময়দা এবং সাদা ময়দা থেকে তৈরি পাউরুটি রুটি পরোটা নান নুডুলস পাস্তা ইত্যাদি বাদ দিতে হবে কেননা এ খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে লিভারে চর্বি জমতে সাহায্য করে তাই যথাসম্ভব এই খাবারগুলো পরিহার করুন ।

লাল মাংসঃ ফ্যাটি লিভার হলে আপনাকে লালমাংশ খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে কেননা লাল মাংস খেলে প্রচুর পরিমাণে লিভারে চর্বি জমে এবং এই খাবার গুলো খাওয়ার ফলে আপনার অনেক সমস্যা সম্মুখীন হতে হয় তাই যথাসম্ভব লাল মাংস খাওয়া কমাতে হবে ।

মদ্যপানঃ অতিরিক্ত মদপানে ফলে ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি প্রায় যারা মদ পান করেন তাদেরকে মদ পান থেকে বিরত থাকতে হবে ।

ফ্যাটি লিভার হলে ডিম খাওয়া যাবে

কেউ যদি ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে তার ডিম খাওয়া যাবে কিনা এরকম অনেকে জানতে চেয়েছে তবে ফ্যাটি লিভার হলে ডিম খাওয়া যাবে কিন্তু ডিম খাওয়ার সময় আপনার কিছু নিয়ম মেনে ডিম খেতে হবে যেমন ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হয়ে আপনি যদি ডিম খান তাহলে ডিম আপনাকে পানিতে সিদ্ধ করে খেতে হবে এবং ডিম খাবার সময় ডিমের সাদা অংশ খেতে হবে এবং হলুদ অংশ অর্থাৎ কুসুম অংশ না খাওয়াই ভালো ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য পুষ্টিকর হিসেবে কাজ করে তাই বলা যায় ফ্যাটি লিভার হলে আপনি ডিম খেতে পারবেন।

ফ্যাটি লিভার হলে যা ব্যায়াম করা উচিত

আপনার যদি ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে অবশ্যই শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা উচিত ।এজন্য আপনি নিয়মিত প্রতিদিন সকালে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে ব্যায়ামগুলোর মধ্যে যেমন আপনি দ্রুত গতিতে হাটা বা দৌড়ানো এছাড়াও জগিং করা ।
ফ্যাটি লিভার হলে যা ব্যায়াম করা উচিত

সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার ইত্যাদি ব্যায়ামগুলো করতে পারেন এ ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনার ফ্যাটি লিভার অনেকটাই কমে যাবে যদি সেটা প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে । তাহলে বুঝতে পারছেন ফ্যাটি লিভারের জন্য আমাদের ব্যায়াম করা অনেক বেশি প্রয়োজন ।

ফ্যাটি লিভার গ্রেড 1 মানে কি

ফ্যাটি লিভার অনেক ধরনের হতে পারে এবং ডাক্তাররা ফ্যাটি লিভারের কে গ্রেড অনুযায়ী ভাগ করে থাকেন তবে ফ্যাটি লিভার মধ্যে গ্রেড ওয়ান হচ্ছে প্রথম আমরা অনেকে ফ্যাটি লিভারের গ্রেড ওয়ান মানে কি সে সম্পর্কে জানতে চান এখন আমরা ফ্যাটি লিভারে গ্রেড 1 সম্পর্কে জানাবো । লিভারের গ্রেড ওয়ান বলতে বোঝায় লিভারের ক্ষতি ছাড়াই লিভারের কোষে হালকা করে চর্বি জমা । এগুলো প্রাথমিক অবস্থা আলট্রাসন এর মাধ্যমে ধরা হয়ে থাকে অর্থাৎ মেডিকেল চেকআপের মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার সনাক্ত করা হয় ।

ফ্যাটি লিভার গ্রেড ২ মানে কি

ফ্যাটি লিভার গ্রেড টু এর মানে হলো এবারে উল্লেখযোগ্য হারে চর্বি জমা এবং সেই সাথে হালকা থেকে মাঝারে ভাবে লিভারে ব্যথা অনুভব করা । তবে এক্ষেত্রে পেটের উপরের দিকে ডান দিকে ব্যথা বা অস্বস্তের মত হতে পারে এবং ক্লান্তির সাথে বমি বমি ভাব লক্ষ্য করা যেতে পারে । যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে এবং উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি ।

সাধারণ প্রশ্নাবলী(FAQ)

প্রশ্নঃ ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কাজে রয়েছে?

উত্তরঃ ফ্যাটি লিভার রোগ সাধারণত যে কারো হতে পারে কিন্তু বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে ডায়াবেটিস পাশাপাশি যারা অতিরিক্ত মদ্যপান করে তাদের ঝুঁকে বেশি রয়েছে ।

প্রশ্নঃ ফ্যাটি লিভার রোগটি ভালো হয়?

উত্তরঃ ফ্যাটি লিভার প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চললে ফ্যাটি লিভার ভালো হয় ।

প্রশ্নঃ ফ্যাটি লিভার রোগ হলে ডিম খাওয়া যাবে কি?

উত্তরঃ ফ্যাটি লিভার রোগ হলে আপনি ডিম খেতে পারবেন তবে ডিমের সাদা অংশ খেতে হবে এবং হলুদ অংশ না খাওয়াই ভালো ।

প্রশ্নঃ ফ্যাটি লিভার রোগ থেকে মুক্তির জন্য ব্যায়াম প্রয়োজন?

উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই কেননা ফ্যাটি লিভার রোগ যদি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে এবং তাহলে আপনি শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামের মাধ্যমে কমাতে পারেন মনে রাখবেন শারীরিক ওজন কমাতে পারলে ফ্যাটি লিভার অনেকটাই কমে যায় ।

শেষ কথা ফ্যাটি লিভার কেন হয়

সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করলাম ফ্যাটি লিভার কেন হয় সে সম্পর্কে এবং ফ্যাটি লিভার হলে কোন খাবারগুলো আমাদের খাওয়া উচিত এবং কোন খাওয়ার গুলো পরিহার করা উচিত সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে আপনার যদি ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেন এবং নিজের জীবনযাত্রাকে পরিবর্তন করুন মনে রাখবেন হলে আপনি পারেন সচেতন ভাবে চলে সে রোগকে ভালো করতে । সবাই ভালো থাকবেন ধন্যবাদ ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

NETEINFO ওয়েবসাইটে এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন কেননা প্রতি কমেন্টের রিভিউ করা হয়

comment url