কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
শরীর দুর্বল হলে করণীয় কি - শরীর দুর্বল হলে কি খেতে হয়কালোজিরা আমাদের সকলের
খাবার মসলা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি ।
কেননা কালিজিরা কে সকল রোগের মহা ঔষধ হিসেবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও কোরআনে বর্ণিত
রয়েছে কালোজিরা হলো মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের মহা ঔষধ । আপনি যদি কালোজিরা
উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য ।
পোস্ট সূচিপত্রঃআজকের এই পোস্টটিতে কালোজিরার খাওয়ার উপকারিতা সহ
কালোজিরা প্রতিদিন খেলে কি হয় এছাড়াও প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে
কি হয় কালোজিরা খেলে পেটে গ্যাস হয় কিনা ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে ।
তাহলে চলুন কালোজিরা খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও প্রতিদিন কতটুকু পরিমাণ কালোজিরা
খাওয়া যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করি।
রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়
আপনি চাইলে প্রতিদিন রাত্রে কালোজিরা খেতে পারেন। কেননা কালোজিরা রাত্রে খেলে
আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে । কালোজিরা পেটের অনেকগুলো সমস্যা
সমাধানে কাজ করে ।
- পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করে
- গ্যাসের সমস্যা থাকলে দূর করে
- আমাশার সমস্যা থাকলে নিরাময় করে
- মাথার চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে
- যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহ অন্যান্যদের ডায়াবেটিস ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ।
- কালোজিরা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
- অ্যালার্জিজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে কালোজিরা সাহায্য করে
- রক্তের শর্করা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে কালোজিরা সাহায্য করে
- এছাড়াও কালোজিরা তেল মাথায় ব্যবহার করলে মাথা ব্যথা কমে
উপরোক্ত সমস্যাগুলো সমাধানে কালোজিরা যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে । তাই যারা রাতে
কালোজিরা খেতে চান তাহলে অবশ্য পরিমাণ মতো খেতে পারেন । কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস
গড়ে তুলুন এবং সুস্থ থাকুন।
প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়
কালোজিরা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো কিন্তু এ কালোজিরা প্রতিদিন খেলে কোন
ক্ষতি করে কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখা উচিত । যে কোন খাবারই পরিমাণ মতো খেলে কোন
সমস্যা দেখা দেয় না কিন্তু আপনি যদি পরিমাণে থেকে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন সে
ক্ষেত্রে অবশ্যই সেটা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হবে ।
তাই প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত । চলুন
তাহলে আমরা জানি প্রতিদিন কালোজিরা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আপনার কি কি ক্ষতি হতে
পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খেলে শরীরের রক্ত জমাট বাধা কমে যেতে পারে। এর ফলে রক্তপাত হওয়া ঝুঁকি বেশি থাকে ।
- অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায় ।
- কালোজিরা তেল যারা বেশি পরিমাণে ব্যবহার করেন তাদের এলার্জি সমস্যা হতে পারে ।
- যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা অবশ্যই শরীরের রক্তে শর্করা চেকআপ করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কালোজিরা খেতে পারেন ।
প্রতিদিন পরিমাণ মতো কালোজিরা খেলে কোন সমস্যা দেখা দেয় না । কিন্তু আপনাকে
অবশ্যই কালোজিরা খাওয়ার সময় পরিমাণ মতো খেতে হবে । কালোজিরা তেমন কোন সাইড
ইফেক্ট নেই আপনি চাইলেই খেতে পারেন । তবে অবশ্যই যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কালোজিরা খাওয়া উচিত ।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা অনেক রয়েছে । কালোজিরা একটি ঔষধি গুনসম্পন্ন
উপাদান তাই কালোজিরা অনেকে ভর্তা করেও ভাতের সাথে মাখিয়ে খান । এছাড়াও কালোজিরা
অনেক গুণসম্পন্ন জন্য অনেকে এটা মধুর সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকে । তবে কালোজিরা
চিবিয়ে খেলে সবচেয়ে ভালো উপকার পাওয়া যায় । চলুন তাহলে কালোজিরা চিবিয়ে খেলে
কোন উপকার গুলো পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করি ।
- কালোজিরা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির করতে সাহায্য করে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভূমিকা পালন করেন
- ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়
- খাবার হজমে সাহায্য করে
- আমাশা নিরাময় কাজ করে
- পেট ব্যথা থাকলে দূর করে
- শরীরের রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে
- শরীরের ব্যথা অনুভবকে দূর করে
- ঠান্ডা জনিত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে
- শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- শ্বাসকষ্টের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে
- নারী ও পুরুষের উভয়ের যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
একথা বলতে গেলে কালোজিরা হল সকল রোগের মহা ওষুধ । তাই আপনি আপনার রুজি মতো যেভাবে
ইচ্ছা কালোজিরা খেতে পারেন তবে অবশ্যই সেটা সঠিক পরিমাণ মতো খেতে হবে । আপনি
কালোজিরা যেভাবে খান না কেন এর উপকারিতা আপনি নিশ্চয়ই পাবেন । তাই কালোজিরা অনেক
গুণসম্পন্ন একটি উপাদান।
কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়
আমাদের দেহের পাচনতন্ত্র ঠিক না থাকলে কালোজিরা খেলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে
।কালোজিরা খেলে পেটে গ্যাস হওয়া সম্ভাবনা থাকে না কেননা কালোজিরা পেটে গ্যাস
কমাতে সাহায্য করে । এছাড়াও কালোজিরা পেটের খাবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য
করে এমনকি আমাশা নিরাময় কালোজিরা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে । তাই আপনি যদি
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা ও পানি খান তাহলে আপনার গ্যাসের সমস্যা অনেকটা
দূর হয়ে যাবে ।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস
আপনারা অনেকে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানেন কিন্তু জানার পরেও জানতে চান
ইসলামী শরীয়া মোতাবেক কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস সম্পর্কে । আপনি যদি এই
ইসলামিক মোতাবেক কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচে
ভালোভাবে পড়ুন।
প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত কালোজিরা ব্যবহার যুগ যুগ থেকে চলে আসছে।
কালোজিরা আমাদের মানব দেহের বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ও প্রতিরোধক হিসেবে
ব্যবহার হয়ে আসছে এর জন্য কালোজিরা কে অনেকে কালো হিরা বলে আখ্যা দিয়েছে। অনেকে
আছে যারা কালোজিরা কে শুধু মসলা হিসেবে মনে করেন কিন্তু কালোজিরা শুধু একটি মসলা
না এর ঔষধে গুনাগুন অনেক বেশি এছাড়াও কালোজিরা থেকে যে তেল উৎপাদন হয় সে তেল
আমাদের মানব দেহের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
আমাদের মানবদেহে জন্য প্রয়োজন ফসফরাস , ফসফেট , আয়রন ছাড়া অন্যান্য উপাদান
গুলো কালোজিরা মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে । এজন্য কালোজিরা আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে । কালোজিরা প্রশংসা করেছেন আমাদের প্রিয় নবী
হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে শুনেছেন কালোজিরা হলে সকল প্রকার রোগের উপশম। তবে মৃত্যু
ব্যতীত। । (মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৯)
তাই কালোজিরা যেকোনো ধরনের রোগের নিরাময়ের জন্য আপনি খেতে পারেন তবে যাদের অধিক
পরিমাণে সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কালোজিরা
খাওয়া উচিত কালোজিরা আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে
থাকে । এছাড়াও বিভিন্ন গবেষক কালোজিরা কে গবেষণা করে তারাও বলেছেন যে কালোজিরা
সকল রোগের নিরাময় হিসেবে খাওয়া যেতে পারে ।
তবে কালোজিরা ব্যবহার এক এক রোগের জন্য একেক রকম ভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
আবার কালোজিরা তেল ব্যবহার ফলে মাথাব্যথা কমে এছাড়াও কালোজিরা তে যে পরিমাণ
ক্যারোটিন থাকে সেটা ক্যান্সারে প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে । কালোজিরা আমাদের
দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধাদের অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করে থাকে ।
টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়
কালোজিরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা আমাদের দেহের টিস্যু তৈরিতে ও
মেরামত করতে সাহায্য করে । এছাড়াও কালো জিলাতে রয়েছে ওমেগা ৩ এবং ৬ ফ্যাটি
অ্যাসি ড রয়েছে যেটা আমাদের শরীরের স্বাস্থ্য কে ও হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য
করে । এছাড়াও কালোজিরা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধির সাথে সাথে রক্তের শর্করা মাত্রা
নিয়ন্ত্রণ করে এবং দেহের মধ্যে ফাইবার সৃষ্টি করে
আরো পড়ুনঃ ব্রণ মুক্ত ত্বক পাওয়া সহজ টেকনিক জানুন
কেননা কালোজিরাতে রয়েছে পরিমাণে ফাইবার । কালোজিরা নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের
মত সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায় । কালোজিরাতে রয়েছে খনিজ , আয়রন , ম্যাগনেসিয়াম ,
ফসফরাস , জিংক সহ আরো অন্যান্য ভিটামিন গুলো এর জন্য কালোজিরা আমাদের দেহের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ।
কালোজিরাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ক্ষতিকর কোষ
গুলোকে করতে সাহায্য করে এছাড়াও ক্যান্সারের প্রতিরোধ হিসেবে সাহায্য করে থাকে ।
তাই আপনি টানা সাত দিন কালোজিরা খেলে এই উপরের উপকার পেতে পারেন । তবে অবশ্যই
কালোজিরা খেলে পরিমাণমতো খেতে হবে ।
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরা কে বলা হয় সকল রোগের মহা ঔষধ হিসেবে । কেননা কালোজিরা অনেক পুষ্টিগুণ
সম্পন্ন একটি উপাদান । সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেকে
জানতে চায় তাই আমরা এখন সেই সম্পর্কে আলোচনা করব ।
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে প্রথমত আপনার পেটের গ্যাসের সমস্যা দূর করতে
সাহায্য করবে এছাড়াও খাবার হজম করতে কালোজিরা এই ধরনের এনজাইম সৃষ্টি করে যেটা
পেটের খাবার হজম করতে অনেক বেশি উপকারী । এছাড়াও সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে
আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় । কালোজিরাতে প্রচুর পরিমাণে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যেটা আমাদের দেহের ক্ষতিকর পদার্থগুলোকে বের করতে
সাহায্য করে ।
যাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা অনুভব করে তারা প্রতিদিন সকালে এক চামচ
কালোজিরা খেলে তাড়াতাড়ি আরাম পাবে । এছাড়াও মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে
কালোজিরা কোন তুলনা হয় না । তাই শরীরের যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে কালোজিরা ভূমিকা
অপরিসীম । তাই সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া ।
প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে কালোজিরা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে উচ্চ রক্তচাপ
কমাতে কোলেস্টরে মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে এবং দেহের রোগ প্রতিরক্ষ ক্ষমতা বাড়াতে
সাহায্য করে তাই প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত সে সম্পর্কে সঠিক কোন
উত্তর নেই কেননা কালোজিরা আপনাকে খেতে হবে আপনার বয়স ওজন এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা
অনুযায়ী ।
তবে যারা প্রাপ্তবয়স্ক কালোজিরা খেতে চান প্রতিদিন তারা চা চামচের এক চামচ
অর্থাৎ এক গ্রাম পরিমাণ কালোজিরা খেতে পারে । তবে আপনার শারীরিক অবস্থার অনুসারে
কালোজিরা খাওয়ার পরিমাণ কম বেশি হতে পারে । আপনি যদি কালোজিরা বেশি পরিমাণে খেতে
চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তা খেতে হবে ।
কালোজিরা প্রতিদিন খেলে আপনার দেহের অনেক উপকারে আসবে তবে সেটা অবশ্যই পরিমাণ মতো
খেতে হবে । কেননা প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত কালোজিরা সেবন করলে অনেক ক্ষতি
সম্মুখীন হতে হবে। তাই যারা প্রতিদিন কালোজিরা খেতে চান অবশ্যই একজন ডাক্তারের
পরামর্শ অনুযায়ী ও পরিমান মত কালোজিরা খাবেন ।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা উপকারী উপাদান হলেও আমাদেরকে সেটা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা উচিত।
আপনি যদি কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে নিচের অংশটুকু
ভালোভাবে পড়ুন ।
পরিষ্কার কালোজিরা বাছাই করুনঃ
বাজারে যে কালোজিরা গুলো পাওয়া যায় অনেক সময় সেগুলো অপরিষ্কার থাকে। তাই বাজার
থেকে কিনার পর কালোজিরা বাসায় নিয়ে এসে ভালোভাবে পরিষ্কার করে রোদে শুকাতে দিন
। এতে করে আপনার কালোজিরা খাওয়ার উপযোগী হবে ।
অল্প পরিমান দিয়ে খাওয়া শুরু করুনঃ
আপনারা যারা কালোজিরা খেতে চান অবশ্যই প্রথমের দিকে অল্প পরিমাণে কালোজিরা নিয়ে
খেতে পারেন । এতে করে আপনার শরীরে কতটুকু কালোজিরা প্রয়োজন সে সম্পর্কে জানতে
পারবেন ।
প্রতিদিন সকালে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুনঃ
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা ও মধু খেলে শরীরে অনেক উপকার হয় । তাই যারা
কালোজিরা খেতে চান অবশ্যই তারা সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে অনেক বেশি উপকার
হবে ।
মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়াঃ
কালোজিরা মধুর সঙ্গে খাওয়া যায়। এছাড়াও কালোজিরা তেল দিয়েও মধুর সঙ্গে মিশে
খাওয়া যায় এটা শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকার ।
পুদিনা পাতার সাথে কালোজিরাঃ
পুদিনা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে পুদিনা পাতার রস তৈরি করে তার সাথে কালোজিরা
তেল দিয়ে মিশিয়ে খাওয়া যায় । এটা শরীরের জন্য অনেক উপকার।
ভর্তা বানিয়েঃ
যারা এমনে কালোজিরা খেতে পারেন না তারা কালোজিরা ভর্তার তৈরি করে খেতে পারেন । এর
জন্য আপনাকে পেঁয়াজ মরিচ ও রসুন সাথে কালোজিরা একসঙ্গে ভেজে নিয়ে ভর্তা করে
খাওয়া যায়।
পান কালোজিরা খেলে কি হয়
পান পাতা অত্যন্ত একটি উপকারী হিসেবে পরিচিত । এ পান পাতার সাথে যদি কেউ একটানা
সাত দিন পরিমাণ মতো কালোজিরা এবং তার সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে চিবিয়ে খায়
তাহলে তার যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে । তাই যাদের যৌন সমস্যা রয়েছে তারা পান ও
কালোজিরা তার সাথে মধু মিশিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন । সে প্রাচীনকাল থেকে এই পান
পাতা ও কালোজিরা খাওয়ার প্রচলন প্রায় লক্ষ্য করা যায় । কালোজিরা হল সকল রোগের
মহা ঔষধ । তাই যাদের যৌন সমস্যা রয়েছে অবশ্যই তারা পান পাতা ও কালোজিরা খেতে
পারেন।
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি । যারা প্রতিদিন সকালে
কালোজিরা খেয়ে থাকেন তাদের হজম শক্তি অনেক বৃদ্ধি পায় এবং প্রতিদিন সকালে খালি
পেটে খাওয়ার জন্য পেটের গ্যাস অনেকটাই কমে যায় । এছাড়াও ভালো যে রাখার কারণে
খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণ উন্নত করতে সাহায্য করে । আবার যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের
সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার কারণে এই
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাবেন । তাই বলাই যায় সকালে খালি পেটে কালোজিরা
খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি ।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে কালোজিরার কোন তুলনা হয় না । কেননা
কালোজিরাতে প্রচুর পরিমাণ ওষুধে গুণাগুণ রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের বিভিন্ন
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সতেজ ও সক্ষম রাখতে সাহায্য করে ।
সর্দি কাশি থেকে নিরাময়ঃ
যারা প্রতিনিয়ত সর্দি কাশি সমস্যা জনিত সম্মুখীন হচ্ছেন তারা কালোজিরা খেতে
পারেন। এর জন্য প্রতিদিন কালোজিরা তেলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে হবে। কালোজিরা
তেল এক চা চামচ এবং তার সঙ্গে এক চামচ চা চামচ মধু মিশিয়ে দিনে তিনবার খেতে পারে
এতে সহজেই আপনার সর্দি বা কাশি দূর হয়ে যাবে।
মাথা ব্যথা সমস্যায়ঃ
যাদের অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করে তারা মাথা ব্যথার সমস্যার জন্য কালোজিরা তেল
ব্যবহার করতে পারেন কালোজিরা তেল ভালোভাবে মাথায় লাগিয়ে রাখুন দেখবেন অল্প
কিছুক্ষণের মধ্যে আপনার মাথা ব্যথা ভালো হয়ে গেছে ।
চুল পড়া কমাতেঃ
আপনাদের যাদের চুল পড়ার মত সমস্যা রয়েছে তারা কালোজিরা তেল ব্যবহার করতে পারেন।
কালোজিরা তেলে চুলের গোড়া ও চুলকে অনেক মজবুত করে তোলে তাই প্রতিদিন পরিমাণ মতো
কালোজিরা তেল ভালোভাবে মাথায় ব্যবহার করুন ।
দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতেঃ
আমাদের অনেকেরই দাঁতের ব্যথা বা দাঁতের মাড়ি ব্যথা হয়ে থাকে তাই এই ব্যথা থেকে
মুক্তি পেতে হালকা কুসুম গরম পানিতে কালোজিরা ভিজিয়ে রেখে সে পানি দিয়ে কুলকুচি
করলে দাঁতের ব্যথা অনেকটাই কমে যাবে এবং সেই সাথে মুখের ভেতরে থাকা জীবাণুগুলো
নষ্ট হয়ে যাবে । দাঁতের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী।
পেটের গ্যাস কমাতেঃ
যারা পেটের গ্যাসের সমস্যায় ভুগছেন তারা কালোজিরা খেতে পারে । প্রতিদিন সকালে
খালি পেটে কালোজিরা খেয়ে এক গ্লাস পানি খেলে এই গ্যাসের সমস্যা থেকে সমাধান
পাবেন । এছাড়াও যাদের অতিরিক্ত গ্যাসের সমস্যা তারা কালোজিরা তেল সামান্য পরিমাণ
নিয়ে এক কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারে এতে করে আপনার গ্যাস অনেকটাই কমে
যাবে।
ওজন কমাতেঃ
শরীরের ওজন কমাতে কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী। কালোজিরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
এন্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ওজন কমাতে ও ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই
আপনারা যারা ওজন কমাতে চান তারা কালোজিরা খেতে পারেন ।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতেঃ
কালোজিরা হলো মহা ঔষধ । কালোজিরা খাওয়ার ফলে আপনার দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং
যাদের চোখে লাল ভাব রয়েছে এ লাল ভাব কাটাতে প্রতিদিন কালোজিরা খেতে পারে পরিমাণ
মতো । এছাড়া চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে কালোজিরা খাওয়া যায় ।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেঃ
কালোজিরা খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় । কালোজিরা আমাদের শরীরের থাকা
বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এছাড়াও কালোজিরাতে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
।
হাঁপানি থেকে রক্ষা পেতেঃ
যাদের হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট রয়েছে তারা কালোজিরা খেতে পারেন । প্রতিদিন কালোজিরা
খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে আপনি শ্বাসকষ্ট থেকে রক্ষা পাবেন আবার হালকা গরম পানির
সঙ্গে কালোজিরা গুড়া মিশিয়ে খেতে পারেন এতে করে অনেক আরাম পাবেন।
হাড়ের ব্যথার জন্যঃ
মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার জয়েন্টে বা হাড়ের ব্যথা অনুভব করে এ ব্যথা
কমাতে কালোজিরার কোন তুলনা হয় না । তাই বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা কমাতে কালোজিরা
তেল নিয়মিত মালিশ করলে এই ব্যথা অনেকটা কমে যাবে ।
মাতৃদুগ্ধ বৃদ্ধি করতেঃ
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী । যেসব মায়েরা তার
বাচ্চাদেরকে দুধ খাওয়ান কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ বাচ্চা দুধ পায় না তারা
কালোজিরা খেতে পারেন । ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মতো কালোজিরা খেলে এর
সমাধান পেতে পারেন ।
চর্ম রোগ থেকে নিরাময় পেতেঃ
কালোজিরা তেল ব্যবহার করে চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় । তাই যে স্থানে
চর্মরোগ দেখা দিয়েছে সেখানে হালকা করে কালোজিরা তেল লাগাতে পারেন ।
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সাধারণ জিজ্ঞাসা
প্রশ্নঃ কালোজিরা প্রতিদিন কতটুকু খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ কালোজিরা প্রতিদিন আপনার আঙ্গুলের এক চিমটি পরিমাণ খেতে পারেন এবং
সর্বোচ্চ এক থেকে দুই গ্রাম ।
প্রশ্নঃপ্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে সমস্যা হবে কি?
উত্তরঃ না। আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে কোন সমস্যা হবে না ।
প্রশ্নঃ কালোজিরার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়া যায় কি?
উত্তরঃ কালোজিরা সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়া যায় তবে এক চিমটি কালোজিরা সাথে এক
চামচ মধু সঙ্গে মিশিয়ে সকালে অথবা রাত্রে খেতে পারেন ।
প্রশ্নঃ পান ও কালোজিরা একসঙ্গে খাওয়া যায় কি?
উত্তরঃ পান ও কালোজিরা এবং তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে একসঙ্গে খাওয়া যায় । তিনটি
একসাথে মিশিয়ে খেলে আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে ।
প্রশ্নঃ কালোজিরা খেলে কি ওজন কমে?
উত্তরঃ কালোজিরা খেলে আপনার শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে ।
প্রশ্নঃ কালোজিরা তেল খাওয়া যায়?
উত্তরঃ আপনি কালোজিরা তেল মধুর সঙ্গে অথবা দুধের সঙ্গে মিশে খেতে পারেন ।
প্রশ্নঃ কালোজিরা তেল শরীরে মাখা যায় কি?
উত্তরঃ কালোজিরা তেল আপনার শরীরে মাখা যাবে এছাড়াও মাথা ব্যথা করলে কালোজিরা তেল
মাথাতে মাসাজ করলে আপনার মাথা ব্যথা দূর হয়ে যাবে ।
শেষ কথা। কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করলাম ।
কিভাবে কালোজিরা খেলে আমাদের শরীরের উপকারে আসবে এবং কালোজিরা কতটুক পরিমানে খেলে
স্বাস্থ্যসম্মত হবে এছাড়াও বেশি খেলে কি হবে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ।
আজকের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন ।
এরকম আরো অন্যান্য তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ সবাই
ভালো থাকবেন ।
NETEINFO ওয়েবসাইটে এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন কেননা প্রতি কমেন্টের রিভিউ করা হয়
comment url