ব্রণ মুক্ত ত্বক পাওয়া সহজ টেকনিক জানুন
ভাতের ফ্যান খাওয়ার উপকারিতা - ভাতের মাড়ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে ব্রণের কারণে তাই ব্রণ মুক্ত ত্বক পেতে আমরা সবাই
চায়। শরীরে ত্বকে তৈলাক্ত ভাব থাকলে রইল গ্রন্থির ব্যাকটেরিয়া মাধ্যমে আক্রান্ত
হলে এর আকার বড় হতে থাকে তখন এর ভিতরে পুজ তৈরি হয় যা আস্তে আস্তে ব্রণের পরিণত
হয়।ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ব্রণ বেশি হয়ে থাকে। কিন্তু আজকাল ছেলেমেয়ে
উভয়ের বা মধ্য বয়সে মেয়েদের ব্রণের সমস্যা হয়ে চলেছে ।
পোস্ট সূচীপত্রঃএই ব্রণ মুখে বের হলে খুব অস্বস্তি কর একটু ব্যাপার হয়ে
দাঁড়ায় তাই কিভাবে ব্রণ মুক্ত ত্বক পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আজকের এই পোস্টটি
আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা স্থায়ীভাবে ব্রণ ও ব্রণের দাগ কিভাবে দূর
করা যায় তার সহজ উপায় গুলো আজকে আলোচনা করা হবে।
ব্রণ মুক্ত ত্বক পাওয়া সহজ টেকনিক
মুলতানি মাটিঃ গরমের সময় বা গ্রীষ্মকালে যাদের ত্বক তৈলাক্ত থাকে তাদের বেশিরভাগ
ব্রণের সমস্যা দেখা যায়। তাই গ্রীষ্মকালীন সময় ব্রণ মুক্তত পেতে মুলতানি মাটি
সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট আকারে তৈরি করুন এরপরে সেটা ত্বকে মাখন কিছুক্ষণ রেখে
দেয়ার পর ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন । এভাবে করে কয়েক সপ্তাহ করুন নিয়ম করে
তাহলে দেখবেন আপনার ব্রণ হওয়া সংখ্যা কমে গেছে কেননা মুলতানের মাঠে তৈলাক্ত ত্বক
থেকে অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নেয় ।
শসার রস প্যাক
তৈলাক্ত শরীর থেকে ব্রণ দূর করতে শসার রসের কোন তুলনা হয় না। কেননা তৈলাক্ত
ত্বকের জন্য শসার রস অধিক পরিমাণে কার্যকরী। তাই আপনি বাইরে থেকে আসার পর শসার
রসের সাথে অল্প পরিমাণে পানি মিশিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এভাবে
কয়েকদিন করলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার ব্রণের সংখ্যা অনেকটা কমে এসেছে ।
আবার আপনি যদি চান তাহলে শসার সাথে চাউলের গোড়া মিস করে ব্যবহার করে নিতে পারেন
এছাড়াও যাদের এলার্জির পরিমাণ কম বা এলার্জি নেই তারা মধু ব্যবহার করতে পারেন
তবে আপনি শসার প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে পারবেন এতে করে আপনার
ব্ল্যাকহেডের ও হোয়াইট হেডস দূর হয়ে যাবে। তবে যাদের ব্রণ আছে তারা এ প্যাকটি
ব্যবহার করতে পারবেন না।
কাঁচা হলুদ ও চন্দন কাঠের গুড়োর প্যাক
যাদের মুখে অতিরিক্ত পরিমাণে ব্রণ রয়েছে তারা কাঁচা হলুদ ও চন্দনের কাঠের গুড়োর
প্যাক তৈরি করতে পারেন । এর জন্য আপনাকে কাঁচা হলুদ বাটা ও তার সাথে চন্দন কাঠের
গুঁড়ো একই পরিমাণ একটি বাটিতে নিয়ে এবং পরিমাণ মতো পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে
পেস্ট তৈরি করুন । এরপর আপনার ব্রণের ওপর আলতো ভাবে লাগিয়ে দিন 10 থেকে 15 মিনিট
রেখে দিয়ে ঠান্ডা পানিতে সুন্দরভাবে ধুয়ে ফেলুন। এই কাঁচা হলুদ ও চন্দনের
প্যাকটি আপনার ব্রণ শুধু দূর করবে না এর সাথে আপনার ব্রণের দাগও দূর হয়ে যাবে ।
মধু আপেলের সংমিশ্রণ প্যাক
ব্রণের দাঁত দূর করার জন্য মধু ও আপেলের সংমিশ্রণে প্যাক তৈরি করলে খুব উপকার
পাওয়া যায় তাড়াতাড়ি । আপনার মুখে যদি ব্রণের দাগ থাকে তাহলে আপনি এই মধু ও
আপেলের সংমিশ্রণটা একটি ব্যবহার করতে পারেন । এর জন্য প্রথমে আপনাকে একটি আপেলকে
ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে এবং এ পেস্ট এর মধ্যে কয় থেকে সাত ফোটা মধু
দিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ করুন।
এরপর আপনার মুখে মাখন 10 থেকে 15 মিনিট রাখার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে
ধুয়ে ফেলুন । ধুয়ে ফেলার পর দেখবেন আপনার মুখে টানটান ভাব দূর হয়ে গেছে এবং
এভাবে পাঁচ ছয় দিন রেগুলার ব্যবহার করলে আপনার মুখের দাগ দূর হয়ে যাবে ।
ব্রণ দূর করতে তুলসী পাতার রস
প্রাচীনকাল থেকে তুলসী পাতার কোন বিকল্প নেই কেননা বিভিন্ন অসুখের ওষুধে হিসেবে
গুণান্বিত এই তুলসী পাতার রস। তাই আপনার ব্রণের সমস্যা সমাধানের জন্য তুলসী পাতার
রস অনেক বেশি কার্যকর এর জন্য আপনাকে আপনার ব্রণের স্থানে তুলসী পাতার রস লাগিয়ে
দেন পুরোপুরি শুকিয়ে যাবার পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এভাবে
কয়েকদিন দিলে দেখবেন আপনার মুখের ব্রণ ের সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে ।
ব্রণ দূর করতে চন্দনের প্যাক
ব্রণ সমস্যায় ও ব্রণের দাগ তুলার ক্ষেত্রে চন্দনের প্যাক অনেক বেশি কার্যকর । এর
জন্য আপনাকে চন্দন কাঠের গোড়ার সাথে তিন থেকে চার ফোঁটা লেবুর রস এবং পরিমাণ মতো
গোলাপজল মিশাতে হবে । এই চন্দন প্যাক আপনার ব্রণের দাগের সমস্যা দূর করতে সাহায্য
করবে তবে এখানে যাদের গোলাপ জল পানিতে সমস্যা রয়েছে তারা এর পরিবর্তে মধু
ব্যবহার করতে পারে । এভাবে আপনি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন নিয়ম করে ব্যবহার করলে
এর ফল পাবেন ।
ব্রণে গোলাপজল ও দারুচিনির ব্যবহার
ব্রণের সমস্যার জন্য গোলাপজল পানি খুব ভালো কাজ করে নিয়মিত ব্যাপারে ফলে অনেকের
মুখে দাগ কমে যায় এছাড়াও আপনি ব্রণে আক্রমণ ব্যথা বা চুলকানির জন্য দারুচিনির
গোড়া সাথে গোলাপ জলে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং তারপরে আক্রান্ত স্থানে
২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন এভাবে কয়েক দিন করলে আপনি ব্রণ সংক্রান্ত ব্যথার
জন্য ভালো কাজ করবে এবং চুলকানি কমাবে ।
ব্রণ দূর করতে ডিমের ব্যবহার
মুখের ব্রণ দূর করতে ডিম ব্যবহার করা হয় । তবে ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করতে হয়
আপনার মুখে যদি ব্রণ হয়ে থাকে তাহলে রাত্রে শোয়ার আগে ডিমের সাদা অংশ ব্রণের
আক্রান্ত স্থানে মাখিয়ে রাখতে হবে সারারাত ও পরে সকালে উঠে ধুয়ে ফেলতে হবে ।
এছাড়াও আপনি ডিমের সাদা অংশের সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশ্রণ করে ব্যবহার
করতে পারেন তবে এটা মুখে মাখার আধা ঘন্টার পর ধুয়ে ফেলতে হবে ।
কমলালেবুর খোসা দিয়ে ব্রণ দূর করা
ত্বকের উজ্জ্বলতা ও ব্রণের ভাব কমাতে কমলালেবুর প্যাক তৈরি করুন খুব তাড়াতাড়ি
তার কাঙ্খিত রেজাল্ট পেয়ে যাবে এর জন্য আপনাকে প্রথমে কমলালেবুর খোসা গুলোকে
ভালোভাবে শুকিয়ে গুড়া করে নিতে হবে এবং এর সাথে মসুরের ডাল ও চাল ভিজিয়ে
ভালোভাবে গুড়া করুন এবার তিনটি একত্রে মিশ্রণ করার পর মুলতানি মাটি ভালো করে
মিশিয়ে দিন ।
এরপর ভালো পরিমানে পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে তার সাথে দুই চামচ মত দুধ মিশিয়ে নিতে
পারেন । এতে করে আপনার প্যাক টি খুব সুন্দর হবে এরপর আপনার মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০
থেকে ১৫ মিনিট । তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে সমস্ত মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন এতে করে
আপনার ব্রণের দাগ ও উজ্জ্বলতা এবং ত্বকে তৈলাক্ত ভাব কমে যাবে ।
ব্রণ দূর করতে নিমপাতা রস
নিম পাতা অনেক অসুখের ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে। তেমনি ব্রণ দূর করতে নিম পাতার
রসের কোন জুড়ে নেই । আপনার আশেপাশে থাকা নিম পাতার গাছ থেকে পাঁচ ছয়টি নিমপাতা
ছিড়ে তাজা নিম পাতা ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করুন এবং এর সাথে মুলতানি মাটি ওর সাথে
গোলাপ জল পরিমান মত মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন । এরপর মুখে লাগিয়ে বসে থাকুন
যতক্ষণ পর্যন্ত না শুকায় ততক্ষণ পর্যন্ত । এবং মুখে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।
ব্রণ দূর করতে পুদিনা পাতার ব্যবহার
ব্রণ দূর করতে পুদিনা পাতা অনেক বেশি কার্যকর । প্রায় টাটকা পুদিনা পাতা
ভালোভাবে পিষে পেস্ট তৈরি করে আপনার ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট ।
কয়েকদিন এভাবে দিলে ই আপনার ব্রণ ভালো হতে থাকবে ।
অ্যালোভেরা জেল ব্রণের দাগ দূর করতে
আপনার মুখে ব্রণের দাগ দূর করতে এলোভেরা জেল অনেক কাজ করে । তাই আপনি দিনে
কমপক্ষে দুইবার এলোভেরা জেল মুখে মাখিয়ে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর
ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন এতে করে আপনার মুখে টানটান ভাব ও
উজ্জ্বলতা এবং ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে ।
ব্রণের দাগ দূর করতে টমেটোর ব্যবহার
মুখে ব্রণের দাগ দূর করতে টমেটোর ব্যবহার করা যায় এর জন্য আপনাকে একটি পাকা
টমেটোর কিছু ভাগ নিয়ে রস করে এবং তার সাথে শুসার রস মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি
করুন । এবং এ প্যাকটি 10 থেকে 15 মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন । আপনি একটি সপ্তাহে
দুই থেকে তিন দিন করতে পারেন এভাবে করলে দেখবেন আপনার মুখের দাগ আস্তে আস্তে দূর
হয়ে যাচ্ছে ।
সচারচর প্রশ্ন(FAQ)
প্রশ্নঃ ব্রণ দূর করতে চন্দনের গুঁড়া ব্যবহার করা যায় কিনা?
উত্তরঃ আপনার মুখের ব্রণ দূর করতে চাইলে চন্দনের গুড়া প্যাক অবশ্যই ব্যবহার করা
যায়
প্রশ্নঃ ব্রণে আক্রান্ত স্থানে নখ দিয়ে চুলকানো যাবে কি?
উত্তরঃ ব্রনের আক্রান্ত স্থানে নখ দিয়ে চুলকানো যাবে না এতে করে আপনার ক্ষতি
সম্মুখীন হতে হবে।
প্রশ্নঃ অতিরিক্ত মাত্রায় ব্রণ বের হলে করণীয় কি?
উত্তরঃ আপনার যদি অতিরিক্ত মাত্রায় মুখে ব্রণ বের হয় তাহলে অবশ্যই আপনি একজন
স্কিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে হবে ।
প্রশ্নঃ ব্রণের দাগ দূর করতে এলোভেরা জেল ব্যবহার করা যায়?
উত্তরঃ ব্রণের দাগ দূর করতে অবশ্যই এলোভেরা জেল ব্যবহার করা যায় উপরে সেটা
আলোচনা করা আছে ।
শেষ কথা
সম্মানিত পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করলাম ব্রণ মুক্ত ত্বক পাওয়ার সহজ উপায়
সম্পর্কে । আজকের এই পোস্টে আপনার ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন ।
আর পোষ্টের মধ্যে কোন ভুল হয়ে থাকলে অবশ্যই সেটা কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিন আমরা
সেটা সঠিক করে নেয়ার চেষ্টা করব । এরকম আরো অন্যান্য তথ্য পেতে আমাদের
ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন । সবাই ভাল থাকবেন ধন্যবাদ ।
NETEINFO ওয়েবসাইটে এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন কেননা প্রতি কমেন্টের রিভিউ করা হয়
comment url